উদ্ধার: মঙ্গলবারের অভিযানে আটক করা শব্দবাজি। মালদহের ইংরেজবাজারে। নিজস্ব চিত্র
কালীপুজো বাকি আরও চারদিন। এরই মধ্যে বাজারে বিকোতে শুরু করেছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। খবর পেয়ে শব্দবাজির বিরুদ্ধে অভিযানে নামল পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে ইংরেজবাজার শহরের বাজার গুলিতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করেছে। তবে ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। আর এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে পরিবেশপ্রেমীরা। একই সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে বাজি বিক্রেতাদের গোপন বোঝাপড়ারও অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। যদিও বোঝাপড়ার বিষয় উড়িয়ে দিয়ে লাগাতার অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা।
পুলিশের ধরপাকড়ের পরেও গত বছর কালীপুজোয় মালদহ জেলা জুড়েই দেদার ফেটেছে শব্দবাজি। যার জেরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন সাধারণ মানুষ। এবারও বাজারে মজুত হতে শুরু করেছে শব্দবাজি। ইংরেজবাজার শহরের বিচিত্রা বাজারে রয়েছে বাজির পাইকারি বাজার। বাজারগুলিতে ঘুরলেই চোখে পড়ছে দোকানে দোকানে সাজানো বাজির পসরা। তারাবাতি, তুবড়ি, চড়কি, হরেক রকমের মোমবাতি সাজানো রয়েছে। তবে আড়ালে অবাধেই বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ শব্দবাজি। চকলেট বোম, সুতলি বোম, আলু পটকা, লঙ্কা পটকা, রকেট, টু-সাউন্ডের মতো শব্দবাজি। বাজি ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, এখন আড়াল থেকেই শব্দবাজি বিক্রি করতে হবে। কারন এখন নিয়মিত পুলিশের অভিযান হবে। তবে পুজোর দু’দিন আগে থেকে পুলিশের অভিযান থিতিয়ে যায়। তারপর থেকেই অবাধে শব্দবাজি বিক্রি চলবে। একাংশ বিক্রেতাদের দাবি, “পুলিশ বরাবরই কালীপুজোর আগে অভিযান চালায়। তারপরেই পুলিশের সঙ্গে বোঝাপড়া করে নিতে হয়। আর বোঝাপড়া হয়ে গেলেই শব্দবাজি বিক্রিতে আর বাধা থাকে না।”
যদিও বোঝাপড়ার দাবি মানতে নারাজ জেলা পুলিশের কর্তারা। পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন রাতে ইংরেজবাজার শহরের বিচিত্রা বাজার, চিত্তরঞ্জন পুর বাজারে অভিযান চালানো হয়। দুই এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৩৫ কেজি নিষিদ্ধ শব্দবাজি আটক করা হয়েছে। লঙ্কা, চকলেট বোম, সুতলি বোমা, টু-সাউন্ডের মতো শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যার বাজার মূল্য লক্ষাধিক টাকা বলে দাবি পুলিশের। তবে ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “অভিযান চালিয়ে প্রচুর শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের খোঁজে তল্লাশি চালানো শুরু হয়েছে।”
নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালানো উচিত বলে দাবি করেছেন পরিবেশপ্রেমীরা। মালদহের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কমিটির সম্পাদক নারায়ণচন্দ্র সাহা বলেন, “পুলিশ যেমন প্রতি বছর নিয়ম করে অভিযান চালিয়ে শব্দবাজি বাজেয়াপ্ত করে, তেমনই কালীপুজোর দিন দেদার শব্দবাজি ফাটতে থাকে জেলা জুড়েই। তাই নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালানো উচিত পুলিশের।” যদিও অভিযান নিয়মিত চলবে বলে জানিয়েছেন অলোক।