কোন পথ দিয়ে এসে একেবারে বাংলাদেশ সীমান্তে তেজস্ক্রিয় ধাতু পৌঁছে গেল, তা এখনও রহস্য। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের একাংশের ধারণা, শিলিগুড়ি থেকে বেলাকোবা হয়ে জলপাইগুড়ি শহর ছুঁয়ে হলদিবাড়ি পৌঁছেছিল তেজস্ক্রিয় ধাতু বহন করে চলা গাড়িটি। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ জেনেছে, উদ্ধার হওয়া ধাতুটি ইরিডিয়াম হতে পারে। তার পর থেকেই রহস্য জমাট বাঁধতে শুরু করে। যে ধাতু সেনাবাহিনীর পরীক্ষাগার অথবা দেশের বিভিন্ন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ছাড়া সাধারণত মেলার কথা নয়, সেটি সাধারণ একটি পাত্রে কালো সেলোটেপ মুড়ে হলদিবাড়ি পর্যন্ত পৌঁছল কী ভাবে? সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা শাখার মতে, যদি সত্যি ধাতুটি ইরিডিয়াম হয়ে থাকে, তবে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠিত হতে চলেছে। তবে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একাংশের অনুমান, ধাতুটিকে বাংলাদেশের একটি অংশ থেকে অন্য অংশে পাচারের মতলব ছিল। তাঁদের দাবি, ফুলবাড়ি লাগোয়া সীমান্ত দিয়ে ধাতুটিকে ভারতে নিয়ে এসে ফের হলদিবাড়ির লাগোয়া সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে বাংলাদেশে চালান করার পরিকল্পনা ছিল।
গত শুক্রবারে হলদিবাড়ির ঘটনায় কেন্দ্র এবং রাজ্যের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা নজর রাখছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা শনিবার বিকেলে হলদিবাড়ি এসে পৌঁছেন বলেও দাবি। রহস্য তৈরি হয়েছে গাড়ি নিয়েও। পুলিশ জেনেছে, গাড়িটি শিলিগুড়ির সহকারি পরিবহণ দফতরে রেজিস্ট্রি করা রয়েছে। গাড়ির মালিকের সঙ্গে ধৃত বাংলাদেশি নাগরিকের আগে থেকেই পরিচয় ছিল বলেও পুলিশ জেনেছে। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা মোবাইলে বেশ কিছু নম্বরও পাওয়া গিয়েছে। পুলিশের একাংশের দাবি, ধৃতদের সঙ্গে আর একটি প্রতিবেশী দেশের যোগাযোগের প্রমাণ মিলেছে। গত শুক্রবার সকালেই শিলিগুড়ির পানিট্যাঙ্কি সীমান্তে ধৃতদের দেখা গিয়েছিল বলে খবর পেয়েছে পুলিশ। শুক্রবার রাতে যখন গাড়িটিকে আটক করে পুলিশ, সে সময়ে পিছনে থাকা আর একটি গাড়ি মুখ ঘুরিয়ে অন্য দিকে চলে যায় বলেও দাবি। সেই গাড়িতে কারা ছিল, সে সম্পর্কেও কিছু তথ্য পেয়েছে পুলিশ। কোচবিহার জেলা পুলিশের এক অফিসারের কথায়, “তদন্তের পুরো গতিপ্রকৃতি নির্ভর করছে উদ্ধার করা পাত্রটিতে কী রয়েছে, তার ওপরে। ইরিডিয়াম বা তেমন কোনও বিস্ফোরক না হয়ে যদি অন্য কিছু হয়, তা হলে ঘটনার তেমন কোনও গুরুত্ব নেই।”