প্রতীকী ছবি
একনজরে দেখলে মনে হবে রাস্তার পাশে বসে একজন প্রতিবন্ধী। পাশেই একজন ভবঘুরে। তেমনই অগোছালো, সঙ্গে পুরনো-কালশিটে পড়া ব্যাগ। ভিতরে থরে থরে সাজানো অস্ত্র।
সেভেনএমএম থেকে পাইপগান, সঙ্গে গুলি-ম্যাগাজ়িন, এ ভাবেই চোরাপথে ঢুকে পড়ছে কোচবিহারে। গত এক মাসে ৩৫টির বেশি আগ্নেয়াস্ত্র পুলিশ আটক করেছে। লকডাউনের সময় আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমায় ঘুম উড়েছে পুলিশের। পুলিশের ধারণা, লকডাউনে দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়। বিধানসভা নির্বাচনও আরও বেশি দেরি নয়। জেলার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ক্ষমতা দখলের লড়াইয়ে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করতে শুরু করেছে রাজনৈতিক দলের কর্মীরাও। এই পরিস্থিতিতে জেলায় রাজনীতির কি অঙ্ক রয়েছে, কাদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপাদাপির অভিযোগ সে-সব নিয়েই এখন তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। খোঁজ শুরু হয়েছে অস্ত্র কারবারীদেরও। কোচবিহারের পুলিশ সুপার সন্তোষ নিম্বালকর বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে।”
পুলিশ সূত্রের খবর, কোচবিহারে দুষ্কৃতীদের হাতে যে অস্ত্র রয়েছে তা মুঙ্গেরের তৈরি। একসময় ওখান থেকে নাইনএমএম পিস্তল ঢুকত জেলায়। সেভেনএমএম নামার পরেই নাইনএমএমের কদর কমেছে। এক সময় জেলায় যুব ও মূল তৃণমূলের দ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল জেলা। সেই সময় তৃণমূলের এক নেতাকে কার্বাইন সহ গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে আরও একটি কার্বাইন উদ্ধার করে পুলিশ। সেই সময় পুলিশের সন্দেহ হয়, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর হাত থাকতে পারে অস্ত্র কারবারের সঙ্গে। যদিও খোঁজখবর নিয়ে সেই বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।
তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন, অস্ত্র কারবারিদের একটি চক্র ছড়িয়ে রয়েছে কোচবিহার থেকে মুঙ্গের পর্যন্ত। চক্রের সদস্যরা গোপন রুট ব্যবহার করেই অস্ত্রের কারবার করছে। কখনও ডূয়ার্সের জঙ্গল পথ, কখনও তিস্তা নদী পেরিয়ে ওই অস্ত্র ঢুকছে। রয়েছে ‘কেরিয়ার’ এবং লাইনসম্যান। লকডাউনে ট্রেন-বাসের বদলে ছোট গাড়ি-বাইক নিয়েই যাতায়াত করে পুলিশের চোখে ধুলো দিচ্ছে তারা। ‘কেরিয়ার’ যাওয়ার আগেই রাস্তায় ঘুরছে লাইনম্যানরা। সবুজ সঙ্কেত পেতেই রওনা হচ্ছে ‘কেরিয়ার’। একটি বাহনে ৩০-৪০ কিলোমিটার যাতায়াত করছে তারা। এর পরেই নেওয়া হচ্ছে নতুন বাহন।