বেপরোয়া ভাবে গাড়ি এবং মোটরবাইককে সতর্ক করতেই রাস্তায় নেমেছিল পুলিশ। সেখানেই বেলাগাম বাইকের ধাক্কায় গুরুতর জখম হলেন এক এএসআই। বর্ষবরণের রাতে দ্রুতগতির বাইকের ধাক্কায় খোদ পুলিশকেই আক্রান্ত হতে দেখে চোখ কপালে উঠেছে সাধারণ পথচারীদের। গত শনিবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে মালবাজার পুরএলাকার গুরজংঝোরা মোড়ের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে।
শনিবার সন্ধ্যা থেকেই মালবাজারের ট্রাফিক পুলিশের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে শহরের গুরজংঝোরা মোড়ে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি করছিল। সেখানেই রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ একটি মোটরবাইক খুব জোরে চালিয়ে এসে ট্রাফিক পুলিশের এএসআই রমেন সরকারকে সজোরে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যায়। রমেনবাবু জাতীয় সড়কের উপরেই লুটিয়ে পড়েন। মাথা ফেটে রক্তও ঝরতে থাকে। অচৈতন্য অবস্থায় তাঁকে মালবাজার মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁর মাথায় সেলাই করে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। জখম এএসআই-কে এরপর রাতেই শিলিগুড়ির সেবক রোডের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। তাঁর পরিস্থিতি সঙ্কটজনক বলেই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাইকটিতে দু’জন আরোহী ছিলেন বলেও প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশকর্মীরা জানান। বাইকটি চালসার দিক থেকে মালবাজার শহরে ঢুকছিল। ধাক্কা মেরে বাইকটিও পড়ে যায়। কিন্তু এরপর বাইক ফেলেই দুই বাইক আরোহী পালিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে ছিলেন মালবাজারের ট্রাফিক ওসি অর্ঘ্য সরকারও। অর্ঘ্যবাবু বলেন, ‘‘আমি এবং রমেন দু’জনেই সড়কের দুই প্রান্তে গাড়ি তল্লাশি করছিলাম। আচমকাই ঘন্টায় ১০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি গতিতে থাকা একটি মোটরবাইক এগিয়ে আসতে থাকে। রমেন বাইকটিকে থামানোর চেষ্টা করার আগেই তাঁকে গিয়ে ধাক্কা মারে বাইকটি।’’ ঘটনার খবর পেয়েই মালবাজার থানায় চলে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) নিমা নরবু ভুটিয়া। বাজেয়াপ্ত করা বাইকটিতে বেশ কিছু নথি মিলেছে। সে থেকেই বাইক আরোহীদের হদিশ মিলবে বলেও জানান তিনি। ৩০৭ ধারায় সরাসরি খুনের চেষ্টার মামলাও রুজু করতে চলেছে পুলিশ।
এ দিকে মালবাজার শহরে দ্রুতগতির বেপোরোয়া বাইকের দৌরাত্ম্যের অভিযোগ বহু দিনের। মালবাজারে নতুন ট্রাফিক ওসির পদ দিয়ে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাবার তৎপরতায় বাসিন্দাদের মনে আশারও সঞ্চার হয়েছে। মালবাজারের চেয়ারম্যান স্বপন সাহা বলেন, ‘‘মারাত্মক ঘটনা। দোষীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক , ট্রাফিক পুলিশ কড়া হাতে বাইক দৌরাত্ম্যকে রুখে দিক আমরা সর্বতো ভাবে
এটাই চাইছি।’’