—নিজস্ব চিত্র।
চাষের কাজে ব্যবহৃত ট্র্যাক্টরের রোটাভেটরের ব্লেড দিয়ে টুকরো টুকরো করা হয়েছিল দেহ! দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনে তরুণী খুনের তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এমনটাই অনুমান তদন্তকারীদের। গত শুক্রবার পাট ক্ষেতে তরুণীর দেহাংশ উদ্ধার হওয়ার পর খুনের তদন্তে নেমে অবশেষে এক জনকে গ্রেফতার করেছে জেলা পুলিশ। ধৃতের নাম সাদ্দাম সরকার। তাঁকে রবিবার বালুরঘাট আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তল। তাঁর দাবি, সাদ্দাম ‘দোষ স্বীকার’ করেছেন। জেরায় জানিয়েছেন, ট্র্যাক্টর দিয়েই খুন করা হয়েছিল মহিলাকে।
পুলিশ সূ্ত্রে খবর, জমি চাষের সময় লাঙলের ফলায় পচাগলা দেহাংশ উঠে আসা চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল তপন ব্লকের রামচন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কালীনগর এলাকায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়। যে জায়গা থেকে দেহাংশ মেলে, সেখান থেকেই একটি হাওয়াই চটি উদ্ধার হয়েছিল। সেই সময় ঘটনাস্থলেই থাকা শাহেদ মোল্লা নামে এক কিশোর পুলিশকে জানায়, ওই চটিটি তার মা সুলেখা বিবির। তিনি তপন ব্লকের ৮ নম্বর গুরাইল গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত নিমপুর এলাকার বাসিন্দা। বয়স ৩৪। তার মা গত মঙ্গলবার থেকে নিখোঁজ বলে পুলিশকে জানায় শাহেদ। এর পরেই এলাকায় দেহের বাকি অংশের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। কিন্তু তার পর আর সুলেখার দেহের বাকি অংশের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মৃতার স্বামী সইফুল মোল্লা পরিযায়ী শ্রমিক। বেশ কিছু দিন ধরে কর্মসূত্রে ভিন্ রাজ্যে রয়েছেন। সুলেখা ওই সইফুলের দুই সন্তান— শায়েদ ও শাকিল। গত মঙ্গলবার বিকেল থেকে নিখোঁজ ছিলেন সুলেখা। কে বা কারা তাঁকে নৃশংস ভাবে খুন করেছেন, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশায় পুলিশ। পরকীয়া সম্পর্কের জেরে খুন না কি অন্য কোনও কারণ, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃত সাদ্দামের সঙ্গে সুলেখার কী সম্পর্ক ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা শুরু করা হয় তপন থানায়। মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে তার দোষ স্বীকার করেছেন। ট্র্যাক্টর দিয়েই মহিলাকে মারা হয়েছে।’’