অভিযোগ প্রত্যাহারে চাপ দিচ্ছেন আইসি, নালিশ নির্যাতিতার বাবার

অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাপ দিচ্ছেন খোদ থানার আইসি-ই। জেলার পুলিশ সুপারকে এই অভিযোগ করলেন এক তরুণীর বাবা। মালদহের বৈষ্ণবনগরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বাড়িতে ঢুকে ওই তরুণীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক উজ্জ্বল মণ্ডল ঘটনার পরে পালিয়ে যান। তবে শেষ পর্যন্ত জুন মাসে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। এখন তিনি জেল হাজতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মালদহ শেষ আপডেট: ২২ জুলাই ২০১৪ ০২:১০
Share:

অভিযোগ প্রত্যাহার করতে চাপ দিচ্ছেন খোদ থানার আইসি-ই। জেলার পুলিশ সুপারকে এই অভিযোগ করলেন এক তরুণীর বাবা। মালদহের বৈষ্ণবনগরে গত ২০ ফেব্রুয়ারি তাঁদের বাড়িতে ঢুকে ওই তরুণীর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেওয়া হয়। ওই ঘটনায় অভিযুক্ত যুবক উজ্জ্বল মণ্ডল ঘটনার পরে পালিয়ে যান। তবে শেষ পর্যন্ত জুন মাসে তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়। এখন তিনি জেল হাজতে।

Advertisement

এই ঘটনার তদন্ত চলছে বৈষ্ণবনগর থানায়। ওই তরুণীর বাবা জেলার পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেছেন, “উজ্জ্বলের উপর থেকে অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিচ্ছেন বৈষ্ণবনগর থানার আইসি।” ওই আইসি প্রফুল্ল দেবরায়ের অবশ্য বক্তব্য, তিনি এফআইআর থেকে অভিযুক্তর নাম বাদ দেওয়ার জন্য চাপ দেননি। তাঁর কথায়, “আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে।” তবে পুলিশ সুপার প্রসূনবাবু জানান, অভিযোগের তদন্ত করা হবে। তিনি বলেন, “যদি অভিযোগ সত্যি হয়, তা হলে ওই আইসি-র বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ঘটনার সময় এই থানার আইসি ছিলেন মানিক দেবনাথ। তিনি ২ মার্চ বানারহাটে বদলি হয়ে যান। বানারহাট থেকেই এসে তখন এই থানার আইসি-র দায়িত্ব পান প্রফুল্লবাবু।

বৈষ্ণবনগর এলাকারই বাসিন্দা ওই তরুণী ও অভিযুক্ত যুবক উজ্জ্বল। সাউথ মালদহ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ওই তরুণী স্থানীয় একটি বেসরকারি নার্সারি স্কুলে শিক্ষিকতাও করতেন। একই কলেজে পড়াশোনা করার সুবাদে কাছাকাছি ঘুঘুপাড়ার বাসিন্দা উজ্জ্বলের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্ব হয়। উজ্জ্বল ওই ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। ওই ছাত্রী ও তাঁর পরিবারের লোকেরা তা মানতে চাননি। এরপরে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ উজ্জ্বল ওই ছাত্রীর বাড়িতে ঢুকে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে তাঁর মুখে অ্যাসিড ঢেলে দেন বলে অভিযোগ। ওই ছাত্রীর শ্বাসনালী ও খাদ্যনালী পুড়ে যায়। তাঁকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা কলকাতার এসএসকেএম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এখন ওই ছাত্রীর শ্বাসনালী কিছুটা ঠিক হলেও, খাদ্যনালী এখনও ভাল হয়নি। তিনি কেবল তরল খাবার খেতে পারছেন।

Advertisement

এই ঘটনার পরে উজ্জ্বলের বাবাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। তিনি এখন জামিনে মুক্ত। ওই তরুণীর বাবার দাবি, উজ্জ্বলের বাবা ও দুই ভাইও দোষী, তাঁরাও সে দিন তাঁদের বাড়ির সামনে এসে রাস্তায় অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু ওই যুবকের দুই ভাইকে পুলিশ এখনও গ্রেফতার করেনি। আইসি প্রফুল্লবাবুর অবশ্য বক্তব্য, তদন্তে দেখা গিয়েছে, উজ্জ্বল একাই ওই বাড়িতে গিয়ে ওই তরুণীর মুখে অ্যাসিড ঢালে। ওই যুবকের বাবা ও দুই ভাই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন। তিনি বলেন, “তাই বাবার জামিনের বিরোধিতা করা হয়নি। দুই ভাইকেও গ্রেফতার করা হয়নি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement