প্রতীকী ছবি।
ছক ছিল একই পরিবারের তিনটি গাড়ি চুরির। দু’টি গাড়ি চুরিতে সফলও হয়েছিল। তৃতীয় গাড়ি চুরি করতে গিয়ে বাজল হর্ন। সেটাই কাল হল গাড়ি চোরের। এখন শ্রীঘরে গাড়ি চুরির আন্তঃরাজ্য পাচার চক্রের পাণ্ডা। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশের হাতে ধৃত ওই অভিযুক্তের নাম প্রদীপ রায়। চোরাই গাড়িটি ছাড়াও ধৃতের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্রও।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার ভোরে ধৃত প্রদীপ এবং তার কয়েকজন সঙ্গী মিলে মেটেলি থানার বাতাবাড়ির রাকেশ শাহর বাড়ি থেকে একটি বড় গাড়ি চুরি করে। শাহ পরিবার গাড়ির ব্যবসায় যুক্ত। এর পর তিন কিলোমিটার দূরে টিলাবাড়ি এলাকায় তাঁর কাকা রাজকুমার শাহর বাড়ি থেকে দু’টি গাড়ি চুরি করতে যায়। মাস্টার কি দিয়ে গাড়ির লক খোলার সময় অসাবধানবশত হর্নে হাত পড়ে প্রদীপের। সেই আওয়াজে বাড়ির লোকজন জেগে যায়। তখন দু’টি গাড়ি ফেলে রেখে, আগে চুরি করা বড় গাড়িটি নিয়ে পালায় প্রদীপ এবং তার সঙ্গী ছটু মহম্মদ।
ঘটনার কথা সেই বাড়ির লোকেরা তখনই মেটেলি থানায় জানায়। সঙ্গে নিজেরাও গাড়ি নিয়ে অভিযুক্তদের পিছনে ধাওয়া করে। এদিকে মেটেলি থানা মারফত খবর পেয়ে প্রথমে ময়নাগুড়ি থানার পুলিশ পিছু নেয়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সাদা পোশাকের পুলিশ সেই সময় জলপাইগুড়ির তিস্তা সেতু সংলগ্ন জাতীয় সড়কে নজরদারি চালাচ্ছিল। গাড়ি-চোরেরা সেতু পার করতেই তাদের পিছু নেয় সেই পুলিশের গাড়িটিও। তাদের যে পিছু নেওয়া হয়েছে সেটা বুঝতে পেরে, চুরিতে সিদ্ধহস্ত প্রদীপও ঘাবড়ে গিয়ে জাতীয় সড়ক ছেড়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। জলপাইগুড়ি শহর থেকে একটু দূরে ডেঙ্গুয়াঝারে চলে আসে সে। সেখানে একটি লেবেল ক্রসিং-এ আটকে পড়ে তার গাড়ি। বেগতিক দেখে গাড়ি থেকে নেমে পালানোর চেষ্টা করে সে। তখন পুলিশ পাকড়াও করে ফেলে প্রদীপকে। তার সঙ্গে থাকা ছোটু মহম্মদ অবশ্য পালিয়ে যায়। জেরায় পুলিশ জেনেছে, মাসদু’য়েক আগে ওই পরিবারেরই আর একটি বড় চুরি করেছিল প্রদীপ।
এদিনই ধৃতকে জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচারবিভাগীয় আদালতে তোলা হলে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
কোতোয়ালি থানার আইসি জানিয়েছেন, ‘‘ধৃতের বিরুদ্ধে এর আগেও গাড়ি চুরির অভিযোগ রয়েছে।’’ পুলিশের সন্দেহ, প্রদীপ কোনও আন্তঃরাজ্য গাড়ি পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত। চোরাই গাড়িগুলি সে ভিনরাজ্যে পাচার করত।