বিজেপির সেই ‘রথের’ দেখা মিলল সভাস্থলে। —নিজস্ব চিত্র
বহু প্রশ্ন নিয়ে পাহাড়বাসী তাকিয়ে ছিলেন ময়নাগুড়ির চূড়াভাণ্ডারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভার দিকে। ছত্তিশগড়ের রায়পুর থেকে প্রধানমন্ত্রী এলেন, দার্জিলিং জেলার বাগডোগরায় বিমান থেকে নেমে হেলিকপ্টারে পৌঁছলেন সভায়। আবার ফিরেও গেলেন। কিন্তু প্রায় এক ঘণ্টার বক্তব্যে নেপালি কবি ভানুভক্তকে প্রণাম জানানো ছাড়া আর একটি কথাও বললেন না পাহাড়ের সমস্যা বা উন্নয়ন নিয়ে। মধ্যে শুধু একবার কলকাতার হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চের প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘‘দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার মানুষ এতে উপকৃত হবেন।’’ তবে, ওইটুকুই। যা শুনে বিস্মিত পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি। হতাশ পাহাড়ের সাধারণ মানুষজন।
দার্জিলিং শহরের প্রবীণ বাসিন্দাদের অনেকেরই বক্তব্য, ২০০৯ ও ২০১৪ সালে তাঁরা পাহাড় থেকে দু’বার বিজেপি প্রার্থীকে জিতিয়ে সংসদে পাঠিয়েছেন এবং উত্তরবঙ্গের বিজেপি’র একমাত্র সাংসদ দার্জিলিং আসনের হওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী পাহাড় প্রসঙ্গে কিছুই বললেন না। তাঁরা মনে করছেন, পাহাড় থেকে নতুন কিছু পাওয়ার সম্ভাবনা নেই বুঝেই বোধ হয় প্রধানমন্ত্রী নীরব থাকলেন।
পাহাড় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নীরবতাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। দলের দার্জিলিং জেলার সভাপতি তথা পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘এত বড় বক্তৃতা, অথচ পাহাড় নিয়ে একটাও কথা নেই। কেন দার্জিলিঙে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় হবে না? রাজ্য সরকার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা করছে পাহাড়ে। কেন্দ্র কেন জেএনইউয়ের মতো কিছু পাহাড়ে করছে না? উনি কোনও উচ্চবাচ্য করলেন না।’’
পাহাড়ের বিজেপি-বিরোধী রাজনৈতিকগুলিও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে। জিএনএলএফের মুখপাত্র নীরজ জিব্বা বলেন, ‘‘আমাদের এটাই সন্দেহ ছিল। সেটাই হল। বড় বড় কথা ছাড়া নরেন্দ্র মোদী যে কিছু বলেন না, করেন না, তা বোঝা গেল।’’ তাঁর বক্তব্য, রাজ্যের সঙ্গে পাহাড়ের সম্পর্ক রেখেই উন্নয়ন এবং সমস্যার সমাধান করতে হবে, সে তা ষষ্ঠ তফসিলিই হোক বা জনজাতিগুলির মান্যতা।
গোর্খা লিগের সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ খাতি বলেন, ‘‘পাহাড় কি সাংসদ তৈরির জায়গা! এই জন্যই আমরা আওয়াজ তুলেছি যে, ভূমিপুত্রকেই রাজনৈতিকদলগুলির প্রার্থী করা দরকার।’’