ছবি: সংগৃহীত
চায়ের গুণমান বজায় রাখতে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকেই পাতা তোলা বন্ধ হচ্ছে দার্জিলিঙের চা বাগানগুলিতে। আর ওই মাসেরই শেষ সপ্তাহ থেকে ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের পাতা তোলা বন্ধ হবে। প্রথম থেকেই এই আমল চলে আসছে। শীতের সুখা সময়ে বন্ধ থাকে চা পাতা তোলা। এই সময়টা চা গাছের যত্ন করতে হয়, পাতা-ডাল ছাঁটতে হয়। বসন্তে যখন ফের নতুন পাতা ওঠে, তখন তা তোলা হয়। চা পাতা তোলার এই নিয়ম অনেক বাগানেই মানা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন সময়ে। তার জেরেই কবে কোন অঞ্চলে চা পাতা তোলা বন্ধ হয়ে যাবে তার নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে চা বিষক দেশের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা চা পর্ষদ তথা টি বোর্ড। ওই সময় বন্ধ রাখতে হবে কারখানাও। যাতে কোনওভাবে লুকিয়ে চা তৈরি না হয় তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। দেশের সব চা বাগান কর্তৃপক্ষকে কারখানা বন্ধ রাখার কথা টি বোর্ডকে মুচলেকা দিয়ে জানাতে বলা হয়েছে।
করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরে লকডাউনে বেশ কিছুদিন চা পাতা তোলা বন্ধ ছিল এ রাজ্যে। যার জেরে মার খেয়েছে দার্জিলিঙের অর্থোডক্স থেকে ডুয়ার্সের সিটিসি—দু’ধরনের চায়েরই উৎপাদন। চা বাগান পরিচালকদের একাংশের দাবি ছিল, লকডাউনের কথা মাথায় রেখে সুখা মরসুমে পাতা তোলার সময়সীমা কিছুটা বাড়িয়ে দেওয়া হোক। যদিও তাতে রাজি হয়নি টি বোর্ড। গুণমান বজায় রাখতে ডিসেম্বরেই পাতা তোলা বন্ধ করতে হবে বলে জানিয়েছে বোর্ড। এ দিন প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী ৫ ডিসেম্বর থেকে দার্জিলিং পাহাড়ের চা বাগানগুলিতে পাতা তোলা বন্ধ হবে। ডুয়ার্স এবং তরাইয়ের বাগানগুলিতে পাতা তোলা বন্ধ হবে ১৯ ডিসেম্বর থেকে। টি বোর্ডের নির্দেশ, পাতা তোলা বন্ধ হওয়ার পরের দু’দিন পর্যন্ত কারখানায় চা উৎপাদন হতে পারে, তারপরে কারখানাও বন্ধ করে দিতে হবে। নির্দেশিকা অনুযায়ী ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহের আগেই সব কারখানা বন্ধ করে দিতে হবে।
ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠনের সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “চা পাতার গুণগত মান বজায় রাখার স্বার্থে টি বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত খুবই ভাল। আমরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।”