ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রীর সভার জন্য তুলে নেওয়া হবে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের ১৫০টিরও বেশি বাস। এমন অবস্থায় ১৮ জানুয়ারি বিকেলের পর থেকে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় সরকারি যাত্রী পরিষেবা কার্যত কী চেহারা নেবে, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ১৯ জানুয়ারি আলিপুরদুয়ারে কর্মসূচি রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেখানে একটি সভা থেকে উপভোক্তাদের হাতে নানা পরিষেবার সুবিধা তুলে দেবেন তিনি। আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার থেকে উপভোক্তাদের উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়া হবে মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে। দুই জেলা প্রশাসনের তরফেই নিগমের কাছে ২০০টির বেশি বাস চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। নিগম সূত্রে খবর, আলিপুরদুয়ার জেলাকে ১১০টি এবং কোচবিহার জেলাকে ৬৭টি বাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক রেখেই আমরা মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের জন্য বাস দেব।’’ কিন্তু সেটা কী করে সম্ভব, তা স্পষ্ট করেননি তিনি।
উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম সূত্রে খবর, বর্তমানে নিগমের হাতে ৭৫০টির মতো বাস রয়েছে। যার মধ্যে ৬৫০টির মতো বাস নিয়মিত চলাচল করে। কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার মিলিয়ে ২০০টির মতো বাস চলে। ওই ২০০টির মধ্যে ১৭৭টি বাস তুলে নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে আরও কিছু বাস এই রুটে চালানো হলেও পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা কোনও মতেই সম্ভব নয় বলে যাত্রীদের একটি অংশ দাবি করেছেন। যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে এখনও উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণের উপরে মানুষ অনেকটাই নির্ভরশীল। এ ছাড়া, সরকারি বাসের সঙ্গে হিসেব করেই বেসরকারি বাস চলে। সেখানে বেসরকারি বাসে ভিড় কয়েক গুণ বেড়ে যাবে। কিন্তু তাতেও সমস্যা মিটবে না। বাসের অভাবে অনেকেরই কাজকর্মে সমস্যা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিরোধীরাও সরব হয়েছেন। বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘‘এখন আর দলীয় অনুষ্ঠানে তৃণমূল লোক পাচ্ছে না। এ জন্য সরকারি কর্মসূচির নাম করে সরকারি খরচে এ ভাবে লোক নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের যেখানে প্রধান কর্তব্য যাত্রী পরিষেবা দেওয়া, সে কথা তারাভুলে গিয়েছে। এর জবাব এক দিন মানুষ দেবেন।’’ সিপিএমের আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক কিশোর দাসও বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী সভা করবেন, সরকারি পরিষেবা দেবেন, ভাল কথা। কিন্তু যাত্রীদের পরিষেবা বিঘ্নিত করা কাম্য নয়।’’