অসমাপ্ত: মালদহ বিমানবন্দরে থমকে রয়েছে কাজ। নিজস্ব চিত্র
কোথাও পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হয়েও পড়ে রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। কোথাও কাজ চলছে ঢিমেতালে। এমনই ছবি কোচবিহার থেকে মালদহ, বালুরঘাট বিমানবন্দরে।
উত্তরবঙ্গের ওই বিমানবন্দরগুলি দিয়ে উড়ানের আশায় রয়েছেন জেলার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার কেন্দ্রীয় বাজেটে ‘কৃষি উড়ানের’ উল্লেখ করায় ক্ষোভ ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে বণিক মহলের। তাঁদের বক্তব্য, পুরনো বিমানবন্দরগুলি থেকে এখনও যাত্রিবাহী বিমান উড়তে পারল না। তার মধ্যেই বাজেটে কৃষি উড়ানের কথা বলছে কেন্দ্রীয় সরকার।
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজ-আমলে উড়ান পরিষেবা চালু হয় কোচবিহারে। মালদহ ও বালুরঘাটে তা চালু হয়েছিল ষাটের দশকের মাঝামাঝিতে। রাজ-আমল শেষ হতেই কোচবিহারে বন্ধ হয়ে যায় উড়ান পরিষেবা। একই ভাবে মালদহ ও বালুরঘাটেও কয়েক বছর চালু থাকার পরে উড়ান বন্ধ হয়। জেলায় জেলায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে থাকে বিমানবন্দরগুলি। অভিযোগ, সেই সুযোগে সে সব এলাকায় বেড়ে ওঠে অসামাজিক কাজকর্ম।
পালাবদলের পরে পুরনো বিমানবন্দরগুলি ফের চালুর উদ্যোগ নেয় রাজ্য সরকার। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, ২০১৩ সালে কলকাতা-বালুরঘাট ভায়া মালদহ সাপ্তাহিক হেলিকপ্টার পরিষেবা চালু হয়েছিল। কোচবিহারেও সেই পরিষেবা চালু হয়। পরে জেলায় জেলায় বিমানবন্দরগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করে রাজ্য সরকার।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহার বিমানবন্দরে ১৭১ একর জমি রয়েছে। সেখানে ১০৬৯ মিটার রানওয়ে তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে। একই সঙ্গে অন্যান্য পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজও শেষ। তবে এখনও সেখান থেকে বিমান পরিষেবা চালু করা হয়নি।
কোচবিহারে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শেষ হলেও মালদহ ও বালুরঘাটে এখনও কাজ চলছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বালুরঘাট বিমানবন্দরে প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে গিয়েছে। রানওয়ের কাজ শেষ। তবে মালদহে এখনও ৫০ শতাংশ কাজ বাকি রয়েছে। মালদহ বিমানবন্দরে ৩৫০ একর জমি রয়েছে। ১৪৫০ মিটার লম্বা ও ৩০ মিটার চওড়া রানওয়ে সেখানে তৈরি করা হবে। যাত্রীদের জন্য বিশ্রামাগার, প্রতীক্ষালয়ও তৈরি করা হবে। ওই সব বিমানবন্দরে ১৮ আসনের ছোট বিমান চলাচল করতে পারবে।
বণিক মহলের দাবি, উত্তরবঙ্গে বিমান পরিষেবা একমাত্র শিলিগুড়িতেই রয়েছে। তাই কোচবিহার, মালদহ বা বালুরঘাটের বাসিন্দাদের বিমানের জন্য যেতে হয় শিলিগুড়িতে। মালদহের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, ‘‘বাজেটে নতুন করে কৃষি উড়ানের কথা বলা হয়েছে। আমাদের এখানে যাত্রিবাহী বিমানের প্রয়োজন। সেই বিষয়ে কেন্দ্র সরকারের ভেবে দেখা উচিত।’’ উত্তর মালদহের বিজেপির সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার বিমানবন্দরের পরিকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নিয়েছিল। সেই কাজই শেষ করতে পারেনি।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘কোচবিহার-সহ উত্তরবঙ্গের একাধিক বিমানবন্দর থেকে বিমান চলাচলে কেন্দ্রের কোনও উদ্যোগ নেই। রাজ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’’
তথ্য সহায়তা: অভিজিৎ সাহা, নমিতেশ ঘোষ, অনুপরতম মোহান্ত