সুষ্ঠু নাগরিক পরিষেবা দিতে করা হয়েছিল নতুন চারটি ওয়ার্ড। মালদহের ইংরেজবাজার পুরসভায় এখন ওয়ার্ড সংখ্যা ২৫টি থেকে বেড়ে ২৯টি হলেও, খাতায় কলমে তা এখনও ২৫। পরিকাঠামো না গড়ে ওঠায় নতুন ওয়ার্ডগুলিতে নাগরিক পরিষেবা বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা।
ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের অভিযোগ, নিকাশি নালা পরিস্কার করা হয় না। সাফাই করা হয় না জঞ্জালও। পথবাতি বিকল হয়ে গেলে তা মেরামত করতে মাসখানেক সময় লাগছে। পানীয় জল, রাস্তাঘাটের ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় কাউন্সিলরদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে জানান বাসিন্দারা। যদিও নাগরিক পরিষেবা না পাওয়া নিয়ে পুরসভা কর্তৃপক্ষের উপর দায় চাপিয়েছেন কাউন্সিলররা। এমনকী তোলা হয়েছে রাজনৈতিক কারণে পরিষেবা নিয়ে গড়িমসির অভিযোগও। ইংরেজবাজারের বিধায়ক তথা কাউন্সিলর নীহাররঞ্জন ঘোষ বলেন, ‘‘নতুন ওয়ার্ডগুলির তিনটিতেই ভরাডুবি ঘটেছে শাসকদলের। তাই তৃণমূল পরিচালিত পুরবোর্ড নতুন ওয়ার্ডগুলিতে সুষ্ট নাগরিক পরিষেবা দিতে টালবাহানা করছে।’’ যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ডগুলিতে নতুন কর্মী নিয়োগের প্রয়োজন।’’ সেই প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
২৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত ছিল ইংরেজবাজার পুরসভা। ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে জন সংখ্যার ভিত্তিতে পুরসভার চারটি ওয়ার্ড ভেঙে নতুন চারটি ওয়ার্ড গঠন করা হয়। ২২ ভেঙে হয় ২৬, ২৩ ভেঙে ২৭, ২৪ ভেঙে ২৮ এবং ২৫ ভেঙে হয় ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। চারটি ওয়ার্ড মিলিয়ে বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ৪০ হাজার। নতুন ওয়ার্ডগুলির মধ্যে ২৬ নম্বরে কংগ্রেস, ২৭ ও ২৮ -এ সিপিএম এবং ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয় তৃণমূল। নতুন ওয়ার্ড হলেও খাতায় কলমে এখনও রয়ে গিয়েছে সেই পুরোনো ওয়ার্ড। ফলে জলের ট্যাক্স, বাড়ির ট্যাক্স সবকিছুই পুরানো ওয়ার্ডের কাউন্টারে গিয়ে জমা দিতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। পুরানো ওয়ার্ডের ভিত্তিতেই বাড়ির মিউটেশন হচ্ছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিটি ওয়ার্ডে কমপক্ষে আট জন করে স্থায়ী সাফাই কর্মী ও একজনকে করে জোগানদার নিয়োগ করা হয়। পথবাতি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্মীও নিয়োগ হয় প্রতিটি ওয়ার্ডে। কিন্তু নতুন ওয়ার্ডে কোনও কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। যার জেরে চলছে এই সমস্যা।
সিপিএম কাউন্সিলর প্রসেনজিৎ ঘোষ, কংগ্রেসের কাউন্সিলর অঞ্জু তিওয়ারিরা বলেন, ‘‘মানুষ পরিষেবা না পেয়ে প্রায়ই আমাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আমরাও তাঁদের সুপরিষেবা দিতে ব্যর্থ।’’ পুরসভার বোর্ড মিটিংয়ে একাধিকবার জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ কোনও কর্ণপাত করেননি বলে দাবি তাঁদের।