নামি কোম্পানির মোড়ক দেওয়া বোতল ৷ সিল করা ছিপি ৷ তার ওপরে আবার রয়েছে হলগ্রাম৷ খালি চোখে নজরেই আসবে না ফারাকটা। কিন্তু অনেকটাই সস্তা হওয়ায় ভাল-মন্দ কিছু না ভেবে বহু লোক তা পানও করছিলেন নিয়মিত৷
শনিবার রাতে জলপাইগুড়ি শহর লাগোয়া গোশালা মোড়ের কাছে একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে, এমনই লক্ষাধিক টাকার জাল মদ বাজেয়াপ্ত করল আফগারি দফতর৷ ঘটনায় কেউ গ্রেফতার না হলেও ওই হোটেলটিকে ইতিমধ্যেই সিল করা হয়েছে৷ পাশাপাশি হোটেলের মালিকের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি৷
আফগারি দফতর সূত্রের খবর, শুধু গোশালা মোড়ের ওই হোটেলটিই নয়, জেলায় আরও বেশ কিছু হোটেল – যেগুলি বিনা লাইসেন্সে চলছে, সেই সব জায়গাতেই এ ধরণের জাল বিলেতি মদের কারবার চলছে বলে তাদের কাছে খবর রয়েছে ৷ গত বছরও ধূপগুড়িতে একটি হোটেল থেকে এ ধরণের জাল মদ আটক করা হয়েছিল ৷ মাস খানেক আগে জলপাইগুড়ি শহরের একটি বাড়ি থেকেও এ ধরণের মদ আটক করা হয়৷ জাল মদের কারবার রুখতে বিনা লাইসেন্সে চলা জেলার বিভিন্ন হোটেলে নিয়মিত অভিযানের কথা ভাবছেন আফগারি দফতরের কর্তারা ৷
জানা গিয়েছে, মূলত শিলিগুড়ি থেকেই চোরা পথে এই ধরণের জাল মদ জলপাইগুড়িতে ঢুকছে ৷ তারপর তা জেলার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ছে৷ তবে প্রশাসনের চোখে ধুলো দিতে ওই সব হোটেলে কিছু আসল মদের বোতলও রাখা হচ্ছে ৷ আর তার আড়ালেই সেখানে চলছে এই জাল মদের কারবার ৷ বোতলে জাল হলগ্রামও লাগানো হচ্ছে বলে অভিযোগ ৷
আফগারি দফতরের কর্তারা জানাচ্ছে, গোশালা মোড়ের যে লাইন হোটেলটি থেকে শনিবার রাতে জাল মদ আটক করা হয়, সেখানে একটা সময় আসল মদই বিক্রি হত ৷ ইদানিং নামি কোম্পানির মদ অনেক সস্তায় মিলছে দেখে প্রচুর মানুষ সেখানে যেতেন ৷ সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত যত বাড়ত, ভিড়ও ততই বাড়তো ৷ এমনকি সেখান থেকে জাল মদ হোম ডেলিভারিরও ব্যবস্থা ছিল ৷
শেষ পর্যন্ত রবিবার রাতে হোটেলটিতে অভিযান চালায় আফগারি দফতর ৷ এবং ওই হোটেল ও হোটেলের সামনে থাকা মারুতি ভ্যান থেকে জাল মদ আটক করে তারা ৷ ততক্ষণে অবশ্য পালিয়ে যায় হোটেল মালিক ৷ জলপাইগুড়ি আফগারি দফতরের সুপার মানিক সরকার বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিনা লাইসেন্সের লাইন হোটেলগুলিতে এ ধরণের কারবার চলছে বলে খবর মেলার পরই ওই হোটেলটিতে হানা দেওয়া হয়েছিল৷’’