প্রতীকী ছবি
লকডাউন? আছে নাকি?
শিলিগুড়ি শহরে বৃহস্পতিবার সকালে যাঁদের পথে বার হতে হয়েছিল, তাঁদের অনেকেই এই প্রশ্ন করেছেন। বিশেষ করে যখন দেখেছেন, টোটো, অটো আর রিকশার মতো গণপরিবহন অবাধে চলছে রাস্তায়। দাঁড়িয়ে আছে মোড়ে মোড়ে। কেউ কেউ সে সব ডেকে বাজার, দোকান গিয়েছেন। কেউ আবার তাতেই মালপত্র চাপিয়েছেন। অবশেষে দুপুর ১২টা নাগাদ বিভিন্ন স্তর থেকে খবর পৌঁছায় পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্বর কাছে। তাঁর নির্দেশে শহর জুড়ে পুলিশি অভিযান শুরু হয়। একাংশকে সতর্ক করে আর একদলকে লাঠিপেটা করে পরিস্থিতি সামলায় পুলিশ। ধরপাকড় শুরু হতেই পাল্টে যায় শহরের চেহারা।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘‘লকডাউন নিয়ে আমাদের জন্য নতুন কোনও ছাড়ের নির্দেশ নেই। অনুমতি ছাড়া টোটো, অটো বা রিকশা চলাচল করবে না। কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ট্র্যাফিক এবং থানাগুলিকে বলে দেওয়া হয়েছে।’’
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, পুলিশ কমিশনারকে হস্তক্ষেপ করতে হল কেন? সকাল থেকে লকডাউন নিশ্চিত করে গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় পুলিশ ছিল। তার পরেও তাঁদের চোখের সামনে দল বেঁধে টোটো, অটো, রিকশা যাতায়াত করে কী করে? পুলিশ সূত্রের খবর, সকাল থেকে বেশি ভিড় ছিল টোটোর। বিভিন্ন মোড়ে টোটোচালকরা স্ট্যান্ড খুলে বসেছিলেন বলে অভিযোগ। ছিলেন রিকশাচালকেরা। অভিযোগ, মোটা ভাড়াও হাঁকছিলেন তাঁরা।
তার পরে কোথাও পুলিশের লাঠি পড়ে, কোথাও তাড়া। তাতেই ভিড় কমে। পুলিশ সূত্রে খবর, বিকেল অবধি ৫০টির বেশি টোটো আটক করা হয়। বহু রিকশার সিট খুলে নেওয়া হয়েছে। কয়েক জনকে ধরে থানায় নিয়ে গিয়ে মামলাও দেওয়া হয়। অফিসারেরা জানিয়েছেন, শহরের অনেক টোটোচালক এখন আনাজ বিক্রি করছেন। তাতে কোথাও বাধা দেওয়া হচ্ছে না। আবার একদল ওষুধ পৌঁছনোর কাজ করছেন। এর জন্য নির্দিষ্ট নথি টোটোর সামনে সেঁটে ঘুরতে হচ্ছে। অভিযোগ, কোথাও কোথায় টোটো বা গাড়ির নম্বর না লিখে একটা নথি দিয়ে একাধিক গাড়িও চালানো হচ্ছে।
বাসিন্দাদের সতর্ক এবং ধরপাকড়ের কাজও একই সঙ্গে চলছে। পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, প্রথমে শহরের বড় রাস্তাগুলিতে অভিযান হয়। তারপর অভিযান হয় পাড়ার অলিগলিতে। দিনের বেলায় পুলিশ থাকায় একদল সন্ধ্যার পর পাড়ার মোড়ে, ক্লাবে আড্ডা বসাচ্ছে। দোকানও খুলছে। প্রমাণ-সহ ধরেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে, জানিয়েছে পুলিশ।