ফাইল চিত্র
সকাল থেকেই লাইন পড়ে যাচ্ছে মেডিক্যাল কলেজের ফিভার ক্লিনিকের সামনে। কেউ জ্বর নিয়ে, কেউ সর্দি-কাশি নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। কারও কারও আবার শরীর হাত-পা ব্যথা ব্যথা করছে। চিকিৎসক দেখছেন, কোভিড পরীক্ষা হচ্ছে। ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। এমনই চিত্র কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের।
মেডিক্যাল সূত্রেই জানা গিয়েছে, আগে যেখানে ৪০ থেকে ৫০ জন ফিভার ক্লিনিকে হাজির হতেন, এখন সেই সংখ্যা পৌঁছেছে ১৫০ জনে। শুধু মেডিক্যাল কলেজ নয়, মহকুমা হাসপাতাল থেকে গ্রামীণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও একই হাল। প্রাইভেট চিকিৎসকদের কাছেও একই অসুখ নিয়ে ভিড় করছেন রোগীরা। কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার রাজীব প্রসাদ বলেন, “আগের থেকে রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। প্রত্যেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ঋতু পরিবর্তনের সময়ে এমনিতেই সর্দি-কাশি বা ভাইরাল ফিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। স্বাভাবিক ভাবেই বর্তমানে সময়ে ওই সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমানে করোনার প্রকোপ চলছে। প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন বহু মানুষ। করোনার ক্ষেত্রেও একই ধরনের উপসর্গ দেখা যায় বলে চিকিৎসকদের অনেকেই জানিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এই সময়ে তাই জ্বর বা সর্দি-কাশির ক্ষেত্রেও অনেকেই ঝুঁকি নিচ্ছেন না। এই অবস্থায় বাসিন্দাদের আরও বেশি সতর্কতার পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য কর্তারা। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চলাচলের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মাস্ক ছাড়া কেউ যাতে বাইরে না বের হন, তা নিয়ে সতর্ক করা হচ্ছে। প্রচারের সঙ্গেই নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে। কোচবিহারের মহকুমাশাসক সঞ্জয় পাল বলেন, “মাস্ক ব্যবহারের জন্য প্রচার চলছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।”
কোচবিহারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ছুঁইছুঁই। অবশ্য সুস্থতার সংখ্যাও তিন হাজার পেরিয়েছে। এই অবস্থায় পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ানো এবং দ্রুত চিহ্নিত করার উপরে জোর দিয়েছে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতর। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, জ্বর, সর্দি, কাশি বা গলা ব্যথার মতো উপসর্গ থাকলে সতর্ক হওয়া ভাল।
কারও করোনা ধরা পড়লে দ্রুত তাঁকে আলাদা করে চিকিৎসা শুরু করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকানো সহজ হবে। আবার অনেকেই সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলি তো বটেই, গ্রামীণ চিকিৎসক বা ওষুধের দোকানগুলিতেও ভিড় করছেন। এক বাসিন্দার কথায়, “আমার বাড়িতে একজন করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তাঁর কোনও উপসর্গ নেই। বাড়ির আরেকজনের খুব জ্বর আসে। সঙ্গে সঙ্গে পরীক্ষার ব্যবস্থা করি। ফল ছিল নেগেটিভ। আসলে একটা ভয় তো থাকেই।”