দুঁদে গোয়েন্দারা ছবি দেখেই চিনতে পারেন মুঙ্গেরের হাত কাটা চন্নুকে। তবে তার আসল নাম নিয়ে অবশ্য সন্দেহ রয়েছে তাদের। অস্ত্র আইনে ধৃতদের কাছে পুলিশ বারবারই শুনে থাকে, ‘চন্নুর মাল’। কিন্তু কয়েক দফায় মুঙ্গের গিয়েও এখনও পর্যন্ত চন্নুর হদিস করতে পারেনি পুলিশ।
বিহারের ডেরায় বসেই বহাল তবিয়তে ইসলামপুরের মতো জায়গাতেও তাই জাল বিছিয়ে যাচ্ছে চন্নুর মতো অস্ত্র কারবারিরা। সূত্রের খবর, ইসলামপুর শহর সহ মহকুমার একটি বড় অংশে বিহার লাগোয়া সীমানা দিয়ে অনায়াসেই ঢুকছে অস্ত্র। কখনও বিহারের জামালপুর থেকে, কখনও বারসই থেকে রায়গঞ্জ হয়ে ইসলামপুরে ঢুকছে নানা ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র। নেপাল থেকে বিহার হয়েও চোপড়াতে আগ্নেয়াস্ত্র আসছে বলে পুলিশের দাবি।
ইসলামপুরের গ্রামগুলিতে রাজনৈতিক সংঘর্ষের সময় দেদার ব্যবহার হয় দেশি পিস্তল। ৮ জুলাই চোপড়াতে এক বিজেপি কর্মীকে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটে। ইসলামপুরের আগডিমঠি খুন্তির প্রধান তাহের আলমকে লক্ষ করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। মাস তিনেক আগে এক ব্যবসায়ীর কর্মচারীকে গুলি করে খুন করে লক্ষাধিক টাকা ছিনতাই এর ঘটনা ঘটেছিল। সম্প্রতি পিস্তল দেখিয়ে ডাকাতিও হয়েছে।
পুলিশের দাবি, বিহারের বেআইনি অস্ত্র কারবারিদের সঙ্গে জেলার দুষ্কৃতীদের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ রয়েছে। এই সব দুষ্কৃতীদের একটি বড় অংশ রাজনৈতিক দলগুলির মদতপুষ্ট। নেতারা সকলে হয়তো জানেন না, কিন্তু, দুষ্কৃতীরা তাঁদের অনুগামী হওয়ার প্রভাবকে কাজে লাগিয়েই বিহারের অস্ত্র কারবারিদের কাছ থেকে ৬ থেকে ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে মূলতঃ চার ধরনের আগ্নেয়াস্ত্র কিনে অন্যান্য দুষ্কৃতীদের হাতে তুলে দিচ্ছে। একেকটি আগ্নেয়াস্ত্র সঠিক ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়ার বিনিময়ে সেইসব দুষ্কৃতীরা ক্রেতাদের কাছ থেকে ‘হাই রিস্ক হ্যান্ডলিং চার্জ’ বাবদ অতিরিক্ত ৩ থেকে ৭ হাজার টাকা নিচ্ছে বলেও পুলিশ জেনেছে। জেলা পুলিশ সুপার অমিতকুমার ভরত রাঠৌরের দাবি, ‘‘বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্রের কারবার নিয়ে গত এক সপ্তাহে পুলিশের কাছে বহু তথ্য এসেছে। এসব বন্ধ করতে একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’’
বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ও অসম লাগোয়া কোচবিহারে আবার ‘ঘোড়া’র কারবার রমরমা। (চলবে)