মন্ত্রী দফতরে না থাকায় কোনও পদস্থ আধিকারিককে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলেন রাজ্য সরকারের পেনশন প্রাপকদের সংগঠন। পদস্থ আধিকারিকদের কেউ স্মারকলিপি নিতে আসেননি বলে সংগঠনের অভিযোগ।
পরিবর্তে এক কর্মী সংগঠনের স্মারকলিপি নিয়েছেন। সেই কর্মীর পদ মর্যাদা বা নাম জানতে চাইলেও, তিনি জানাতে চাননি বলে সংগঠনের দাবি। বুধবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে প্রবীণদের ‘অপমানিত’ হয়ে ফিরে আসতে হয়েছে বলে অভিযোগ। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, মন্ত্রী যে এ দিন দফতরে উপস্থিত থাকবেন না, তা আগে থেকে জানানো হলেও, দফতরে গিয়ে ‘অসৌজন্য’ তাঁরা আশা করেননি বলে দাবি সংগঠনের সদস্যদের।
এ দিন ৬ দফা দাবিতে বামপন্থী সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি পেনশনার্স সমিতির স্মারকলিপি দেওয়া এবং সভার কর্মসূচি ছিল। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে বলে স্থির হয়। সেই মতো মন্ত্রীর দফতরেও কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছিল। সংগঠনের দাবি, দফতর থেকে তাদের জানানো হয়, এ দিন মন্ত্রী দফতরে উপস্থিত থাকবেন না। একে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গের সব জেলা থেকেই প্রতিনিধিদের শিলিগুড়িতে আসার কথা থাকায় দিনক্ষণ পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি বলে জানানো হয়েছে। মন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে দফতরের কোনও পদস্থ আধিকারিকের হাতে স্মারকলিপি তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এ দিন চড়া রোদে সংগঠনের চার প্রতিনিধি স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলেন। সংগঠনের সদস্যরা সকলেই প্রবীণ। স্মারকলিপি দিতে গিয়ে কোনও পদস্থ আধিকারিক তো দূরের কথা, যে কর্মী স্মারকলিপি নেন তিনি নাম পর্যন্ত বলতে চাননি। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রবীণেরা।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য বিষয়টিকে ‘ভুল বোঝাবুঝি’ বলে দাবি করেছেন। দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, দফতরের প্রশাসনিক বিভাগটি উত্তরকন্যায় স্থানান্তরিত হয়েছে। প্রবীণদের সংগঠনের তরফে হিলকার্ট রোডের বিবেকানন্দ ভবনে যাওয়া হয়েছিল। মন্ত্রী থাকবেন না বলে জানানোর পরেও, যে কর্মসূচি বহাল রয়েছে, তাও সংগঠনের তরফে জানানো হয়নি বলে দফতরের পাল্টা দাবি। গৌতমবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমি শিলিগুড়িতে ফিরে সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলব। ওঁরা যদি মনে করেন, আমার সঙ্গে দেখা করবেন, তা হলে ওঁদের সুবিধে মতো সময়ে দেখা করব। অসৌজন্যের কোনও প্রশ্নই নেই।’’
পেনশনভোগীদের সমিতি অবশ্য বিষয়টিকে অসৌজন্য হিসেবেই দেখছেন। স্মারকলিপি দেওয়ার পরে মিত্র সম্মিলনীর সভায় সংগঠনের সভায় প্রস্তাব উত্থাপক অলকেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজকেই কলকাতায় নবান্নে স্মারকলিপি দিতে গেলে আমাদের সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে কোনও মন্ত্রী দেখা করেননি। উত্তরবঙ্গেও একই অভিজ্ঞতা হল। যাঁকে স্মারকলিপি দিলাম, সে নাম, পদমর্যাদাই জানাতে চাইল না। রাজ্য সরকারের থেকে এই অসৌজন্যতা চলছেই।’’ সংগঠনের জেলা সম্পাদক নিখিল পাল বলেন, ‘‘উত্তরকন্যায় স্মারকলিপি দেওয়ার কথা আমাদের জানানো হয়নি।’’
নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম কমানো, পেশনে বকেয়া মহার্ঘয রিলিফ মেটানো সহ ৬ জফা দাবিতে এ দিন কর্মসূচি ছিল সমিতির। মিত্র সম্মিলনীর সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অশোক ভট্টাচার্য।