কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল পরিদর্শনে রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। কোচবিহার হাসপাতালের পুরুষ বিভাগে। নিজস্ব চিত্র
শীত বাড়তে শুরু করেছে। বিকেলের পর থেকেই সমস্যায় পড়ছেন প্রবীণ মানুষেরা। রোগীরাও শীতে কাঁপছেন। অভিযোগ, এই শীতে কম্বল পাচ্ছেন না কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের রোগীরা। বার বার আবেদন করলেও তাতে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সোমবার হাসপাতাল পরিদর্শনে যান রোগীকল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। তাঁকেও ওই অভিযোগ জানান রোগীরা। তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
পার্থপ্রতিম বলেন, ‘‘রোগীদের জন্য পর্যাপ্ত কম্বল রয়েছে মেডিক্যাল কলেজে। তার পরেও তা কেন দেওয়া হচ্ছে না, তা নিয়ে আলোচনা করব। শীঘ্রই বৈঠক ডাকা হবে। দ্রুত প্ৰত্যেককে যাতে কম্বল দেওয়া হয়, সে বিষয়ে বলা হয়েছে। কারও গাফিলতি থাকলে সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের এমএসভিপি রাজীব প্রসাদ বলেন, ‘‘এমন হওয়ার কথা নয়। প্ৰত্যেক রোগীর জন্য কম্বল রয়েছে। নির্দিষ্ট এক-দুটি ওয়ার্ড থেকে অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উপরে হাজার হাজার মানুষ নির্ভরশীল। প্রতি দিন কয়েক হাজার রোগী ওই হাসপাতালের পরিষেবা নিতে হাজির হন। তাঁদের মধ্যে অনেককেই ভর্তি করে নেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সবসময় প্রায় পাঁচশো জনের উপরে রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকেন। তার মধ্যে যেমন সদ্যোজাত শিশু রয়েছে, তেমনই রয়েছে প্রবীণ মানুষেরাও। মেডিক্যাল কলেজ হওয়ার পর থেকেই ওই হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতার উপরে জোর দেওয়া হয়। প্রতি দিন হাসপাতালের বিছানার চাদর পাল্টানো থেকে শুরু করে শৌচাগার পরিচ্ছন্ন রাখা— সবই রয়েছে তার মধ্যে।
রোগীদের একাংশের অভিযোগ, ওই হাসপাতালে সমস্ত পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হলেও আদতে তা হয় না। দিন ছয়েক আগে জেলার এক বাসিন্দা অসুস্থ হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হন। ষাটোর্ধ্ব ওই ব্যক্তির অভিযোগ, ভর্তির পর থেকে তিনি ঠান্ডায় কাঁপছেন। ওই ওয়ার্ডে কর্তব্যরত কর্মীদের কাছে বার বার তিনি কম্বলের আবেদন করলেও তাঁকে তা দেওয়া হয়নি। পরে তিনি বাড়ি থেকে একটি কম্বল নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ঠান্ডায় আমার খুব অসুবিধা হচ্ছিল। সে জন্য আমি কম্বল চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে কম্বল দেওয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে বাড়ির লোককে বলে কম্বল নিয়ে এসেছি। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যানকে সব জানিয়েছি।’’
তৃণমূলের জয়হিন্দ বাহিনীর কোচবিহার জেলা সভাপতি প্রবাল গোস্বামী বলেন, ‘‘কম্বল থাকতেও তা রোগীদের দেওয়া হচ্ছে না, এই অভিযোগ অনেকেই করেছেন। এই নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’