উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা হাসপাতালগুলিতে রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের সুলভে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হল উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর। রবিবার উত্তরকন্যায় বৈঠক সেরে দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ জানিয়েছেন, বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সেখানকার জেলা হাসপাতালগুলিতে প্রচুর রোগী যান। ভর্তি রোগীর আত্মীয়দের রাতে থাকা, খাওয়ার খুবই সমস্যা হয়। সে কারণে উত্তরবঙ্গের জেলা হাসপাতালগুলিতে ১০০ জন পুরুষ এবং ১০০ জন মহিলাদের থাকার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। হাসপাতাল চত্বর বা লাগোয়া যে সমস্ত হোটেল থাকে সেগুলির খাবারও অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর নয়। রোগীর আত্মীয়দের জন্য সুলভে খাবারের ব্যবস্থা করতে হাসপাতালে ক্যান্টিন চালু করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, ‘‘জেলা হাসপাতালগুলি ছাড়া যদি কোনও মহকুমা হাসপাতালে রোগীর চাপ থাকে, প্রয়োজনে সেখানেও একই পরিকাঠামো গড়ে তোলা যেতে পারে।’’ কর্তৃপক্ষকে হাসপাতালের ক্যাম্পাসে জায়গা দিতে হবে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে পরিকাঠামো গড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি। প্রতি ক্ষেত্রে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মতো খরচ হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। প্রত্যন্ত এলাকার প্রসূতি মহিলাদের রাতবিরেতে হাসপাতালে আনার সময় অনেক ক্ষেত্রে গাড়ি মেলে না। রোগী নিয়ে ঝড় বৃষ্টির দিনে পরিবারের লোকদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। সে জন্য প্রসবের কয়েক দিন আগে থেকে হাসপাতালে তাঁদের এনে রাখার জন্য আলাদা ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই মতো উত্তরবঙ্গের হাসপাতালগুলিতে আলাদা পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলে মন্ত্রী জানিয়েছেন।
চলতি আর্থিক বছরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরকে ৫১৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘আরআইডিএফ’ প্রকল্পে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ২০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা পাঠানো হচ্ছে। সব মিলিয়ে চলতি আর্থিক বছরে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকে বিভিন্ন জেলায় প্রায় ৮০০ কোটি টাকার কাজ হবে বলে মন্ত্রী আশাবাদী। কোন জেলায় কী কাজ হবে জেলাশাসকদের সে ব্যাপারে তালিকাও করতে বলেছিলেন। বর্ষা শেষ হতেই যাতে কাজ শুরু করা যায় সে জন্য এই সময়ের মধ্যে টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। পরিকল্পনাগুলির ‘ডিটেল প্রজেক্ট রিপোর্ট’ তৈরি করে, সেচ, পূর্ত দফতরকে দিয়ে ভেটিং করিয়ে জমা করলে কাজগুলি তাড়াতাড়ি শুরু করা যাবে বলে আধিকারিকদের সে ভাবে পরিকল্পনা নিতে বলেছেন তিনি।