উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের উপসর্গ রয়েছে এমন সন্দেহে এক রোগীকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে (আইডি) ভর্তি করানো হবে কি না তা নিয়ে দিনভর নাটক চলল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে।
শুক্রবার সকালে বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি নিয়ে ওই রোগী এসেছিলেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ রয়েছে কিনা যাচাই করার জন্য এসেছিলেন তিনি। প্রথমে জানা যায় কিছুদিন আগে তিনি হংকং থেকে ঘুরে এসেছেন। সেই কারণে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে জানান তাঁকে আইডি-তে ভর্তি করানো হচ্ছে। কিন্তু পরে জানা যায় ওই ব্যক্তি নেপাল থেকে ফিরেছেন। সেই কারণে শেষ পর্যন্ত তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে মেডিসিন বিভাগে।
এই সিদ্ধান্ত ঘিরেই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, ওই রোগী নেপাল থেকে ফিরেছেন জানার পরে তাঁকে আইডি’তে রাখার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন না চিকিৎসকদের একাংশ। কিন্তু রোগীর পরিবারের লোকেরা ভর্তি রাখতে চাওয়ায় তাঁকে মেডিসিন বিভাগে রাখা হয়েছে বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের একাংশের দাবি। হাসপাতাল সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, ‘‘প্রথমে খবর ছিল তিনি হংকং থেকে ঘুরে ফিরেছেন। পরে জানা যায় ওই তথ্য ভুল। তিনি নেপাল থেকে ফিরেছেন। নেপাল থেকে অনেকেই আসা যাওয়া করেন। সেই জন্য রোগীকে আর আইডিতে রাখা হয়নি। তাঁর সোয়াব পরীক্ষারও কোনও ব্যাপার নেই।’’
কিন্তু নেপাল থেকে ফেরা নিয়েও উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্যকর্মী এবং নার্সদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন চিনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ জানার পরেই ভারত-নেপাল সীমান্তে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরে নেপালেও আক্রান্তের খবর মেলে। সেই মতো নেপাল-ভারত সীমান্তে ‘হেল্থ চেকপোস্ট’ বসিয়ে নেপাল থেকে আসা বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। সেই কারণেই ওই ব্যক্তি নেপাল থেকে এলেও তাঁকে আইডি’তে রাখা উচিত ছিল বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে। কোনও কারণে করোনাভাইরাস সংক্রমণের বিষয় হলে মেডিসিন বিভাগে ওই ব্যক্তির কাছাকাছি থাকা অন্য রোগীরা বিপাকে পড়তে পারেন বলে সন্দেহ স্বাস্থ্যকর্মীদের। স্বাস্থ্যকর্মীদের আর একটি অংশের দাবি, যদি করোনাভাইরাসের বিষয় না হয়ে থাকে তা হলে সাধারণ সর্দি, জ্বরে আক্রান্ত রোগীকে মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করার কোনও যুক্তি নেই।
অন্য দিকে জলপাইগুড়ির বাসিন্দা অনিমেষ চন্দ্রদামকে সর্দি, জ্বরের উপসর্গ নিয়ে বুধবার আইডিতে ভর্তি করানো হয়েছিল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। তাইল্যান্ড থেকে সম্প্রতি ফিরেছেন তিনি, সেই কারণে এই পদক্ষেপ ছিল। নাইসেড থেকে তাঁর সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসায় এ দিন তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়। তিনি বাড়ি ফিরেছেন। তাইল্যান্ড ফেরত অপর যুবক বিশ্বজিৎ বণিককে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালের আইডিতে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর সোয়াব পরীক্ষা রিপোর্ট এখনও আসেনি। তাঁর চিকিৎসা চলছে। বিশ্বজিত বাগডোগরার রানিডাঙার বাসিন্দা।