চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগীমৃত্যুর অভিযোগ উঠল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে। শুক্রবার গভীর রাতে হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসা না করেই অরবিন্দ মুখোপাধ্যায় নামে ডায়াবেটিসের এক রোগীকে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। পরে মারা যান বছর পঁয়ষট্টির ওই বৃদ্ধ।
শিলিগুড়ির দেশবন্ধুপাড়ার বাসিন্দা ওই রোগীর পরিবারের অভিযোগ, রাতে তাঁর পায়ের সংক্রমণ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছিল। নার্সকে তা দেখতে বলায় জানানো হয় চিকিৎসক নেই। তাঁকে খবর দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক আসতে দেরি হচ্ছে কেন বারবার জানতে চাইলে পাশের ইউনিট থেকে ডাক্তারকে ডাকা হয়। অভিযোগ, তিনি দূর থেকে দেখে হাত দিয়ে পায়ের ওই অংশ চেপে ধরে থাকতে বলেন। এর পরেই রোগীর মৃত্যু হয়। শনিবার রোগীর পরিবারের তরফে চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে লিখিত অভিযোগও জানানো হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালের সুপার মৈত্রেয়ী কর স্বাস্থ্য বিভাগের বৈঠকে কলকাতায় গিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘অভিযোগের বিষয়টি শুনেছি। ফিরে গিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখছি।’’
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ডায়াবেটিসের রোগী অরবিন্দবাবু জানুয়ারি এবং ফেব্রুয়ারিতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি থেকে চিকিৎসাও করিয়েছিলেন। তার পর বাড়িতেই ছিলেন। গত ১৫ মার্চ পরিবারের লোক পরীক্ষা করিয়ে দেখেন হিমগ্লোবিন কম রয়েছে। সে জন্য শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। সেখানে চিকিৎসক জানান রোগীর পরিস্থিতি ভাল নয়। তা ছাড়া শিলিগুড়ি হাসপাতালে ডায়াবেটিসের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও নেই। চিকিৎসক রেফার করে দিলে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১৬ মার্চ বিকেলে তাঁকে ভর্তি করানো হয়।
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভর্তি করানোর পর চিকিৎসক জানান, রোগী হৃদরোগেও আক্রান্ত হয়েছেন। পরদিন আবার চিকিৎসক জানান হৃদরোগের সঙ্গে কিডনিও আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। ডায়াবেটিস থেকে পায়ে সংক্রমণ হয়েছে বলে তা ড্রেসিং করাতে বলেন চিকিৎসক। সন্ধ্যা ৭টায় ড্রেসিং করিয়ে আনা হয়। এর পর রাত একটা নাগাদ অরবিন্দবাবুর স্ত্রী রীতাদেবী হাসপাতাল থেকে বাড়িতে ফোন করে জানান পা থেকে প্রচুর রক্ত বার হচ্ছে।
অরবিন্দবাবুর মেয়ে শ্রাবণীদেবীর অভিযোগ, ‘‘মা চিকিৎসককে ডাকতে গেলে নার্স জানান চিকিৎসক নেই। চিকিৎসক আসছে না দেখে বারবার বলা হলে পাশের ইউনিট থেকে চিকিৎসককে ডাকা হয়।’’ তবে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখেননি বলে অভিযোগ। রাত আড়াইটে নাগাদ রোগী মারা যান। তাঁর শয্যা ততক্ষণে রক্তে ভেসে গিয়েছিল।