দুই জেলায় দুই রূপে আইনরক্ষক

গুলি-কাণ্ডে অভিযুক্ত অধরা বাবুরহাটে

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির খাসতালুকে সিপিএম কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনার পর পেরিয়েছে দু’দিন। তবুও দোষীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আন্দোলনে নামল বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোট। শনিবার বিকেলে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার বাবুরহাট এলাকায় ওই মিছিল হয়। মিছিলে সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, আরএসপি, কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা তো বটেই বেশ কয়েকজন জোট প্রার্থীও সামিল হন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৮ মে ২০১৬ ০২:৪৫
Share:

বাবুরহাটে সিপিএম কর্মীর বাড়িতে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে জোটের ধিক্কার মিছিল। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব

তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতির খাসতালুকে সিপিএম কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনার পর পেরিয়েছে দু’দিন। তবুও দোষীরা গ্রেফতার না হওয়ায় আন্দোলনে নামল বাম গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ জোট।

Advertisement

শনিবার বিকেলে কোচবিহার কোতোয়ালি থানার বাবুরহাট এলাকায় ওই মিছিল হয়। মিছিলে সিপিএম, ফরওয়ার্ড ব্লক, সিপিআই, আরএসপি, কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা তো বটেই বেশ কয়েকজন জোট প্রার্থীও সামিল হন। অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি ওঠে মিছিলে। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায় বলেন, “দলের কর্মীর বাড়িতে গুলি চালনার ঘটনায় তৃণমূল মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা জড়িত। ভোটের আগেও ওকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ হয়ত অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছে। কিন্তু এখনও দোষীরা কেউ ধরা পড়েনি। ইতিবাচক ফল দেখতে চাই। তাই মিছিল করা হয়েছে।”

পুলিশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বাবুরহাটের বাসিন্দা সিপিএম কর্মী সজল খাসনবিসের বাড়ি লক্ষ্য করে বৃহস্পতিবার রাত ১০ টা নাগাদ দুষ্কৃতীরা দু’রাউন্ড গুলি চালায় বলে অভিযোগ। সজলবাবু নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের ১৩৯ নম্বর বুথে পোলিং এজেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। ভোটকেন্দ্র থেকে তিনি বাড়ি ফেরার কিছুক্ষণ বাদে হামলা হয়। কেউ জখম না হলেও দরজা ভেদ করে গুলি দেওয়ালে লাগে। ওই রাতেই পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। শুক্রবার সজলবাবু কোচবিহার কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

Advertisement

নাটাবাড়ির সিপিএম প্রার্থী তমসের আলি বলেন, “এবার মানুষ নিজের ভোট নিজে দিয়েছেন। গণতন্ত্রের জয় হবে। তাতেই দিশেহারা হয়ে তৃণমূল হামলা করছে। শাসকদল যেখানেই সন্ত্রাস করবে সেখানেই ঐক্যবদ্ধভাবে পাশে থাকার বার্তা দিয়েছি। দ্রুত বাবুরহাটের গুলির ঘটনায় দোষীরা ধরা না পড়লে প্রয়োজনে পুলিশ সুপারের অফিস ঘেরাও করে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।”

তৃণমূল অবশ্য তাদের বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, বাবুরহাটের ওই গুলির ঘটনা সিপিএমের ‘গট আপ গেম’। তাঁদের প্রশ্ন কারও ক্ষতির উদ্দেশে দরজায় গুলি কেন চালান হবে? তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “ ভোটে পরাজয় হচ্ছে বুঝে গিয়েই সিপিএম পরিকল্পিতভাবে এলাকায় অশান্তি করতে চাইছেন। পুরোটাই গটআপ গেম। তৃণমূলের বিরুদ্ধে দোষারোপ করে কোনও লাভ হবেনা।”

জোটের ডাকা এ দিনের মিছিলে সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক তারিণী রায়, আরএসপির জেলা সম্পাদক তাপস সাহা, সিপিআই নেতা পার্থপ্রতিম সরকার, ফরওয়ার্ড ব্লকের দীপক সরকার, কংগ্রেসের রবীন রায় উপস্থিত ছিলেন।

প্রার্থীদের মধ্যে নাটাবাড়ির সিপিএম প্রার্থী ছাড়াও ছিলেন কোচবিহার উত্তর ও দক্ষিণ কেন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী নগেন্দ্রনাথ রায় ও দেবাশিস বণিক। ভোটের আগে কোচবিহারের টাকাগছেও নগেন্দ্রবাবুকে লক্ষ্য করেও গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

কোচবিহারের পুলিশ সুপার সুনীল যাদব বলেন, “বাড়িতে গুলি চালানোর অভিযোগে নির্দিষ্টভাবে কারও নাম বলা হয়নি। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement