এখনও ঘরই গুছিয়ে উঠতে পারেনি বিরোধীরা। তাই প্রচারের ময়দানে শুধু তৃণমূল। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর পুরসভা এলাকার ছবিটা এরকমই।
প্রার্থী পদ প্রত্যাহারে শাসক দলের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টির অভিযোগ উঠছে প্রথম থেকেই। এরই জেরে মোট ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে দুটি ওয়ার্ড বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। এরপর প্রচারে নামতে গিয়ে শুরুতেই হুমকি ও মারধরের ঘটনায় শঙ্কিত বিজেপি এবং সিপিএমের কর্মীরা কিছুটা বিভ্রান্ত বলেও অভিযোগ। বিরোধীদের ওই সমস্ত অভিযোগ অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র। তাঁর অভিযোগ, বিরোধীরা প্রথমে প্রার্থী খুঁজে পায়নি। অন্য ওয়ার্ড থেকে ধরে এনে মনোনয়নপত্র পেশ করলেও পরে ওই প্রার্থীরা নিজেরাই মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। অথচ মিথ্যা হুমকির অভিযোগ তোলা হচ্ছে। পায়ের তলায় মাটি নেই বুঝতে পেরে মিথ্যা সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিরোধীরা নাগরিকদের বিভ্রান্ত করতে চাইছেন।
গঙ্গারামপুর পুরভোটের আর মাত্র তিন সপ্তাহ বাকি। কিন্তু শুরুতেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থীদের হুমকি ও প্রচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তুলে কার্যত ময়দান ছেড়ে বসে আছে সিপিএমও। আগামী ২৫ এপ্রিল গঙ্গারামপুর পুরসভার মোট ১৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬টিতে ভোট হবে। পোস্টার, দেওয়াল লিখন থেকে এলাকায় মিছিল, এভাবেই তৃণমূলের তরফে প্রথম দফার প্রচার শেষ হলেও কিছু এলাকায় দেওয়াল লিখন ও ফেস্টুনেই বিরোধীদের প্রচার আটকে রয়েছে বলে অভিযোগ। গঙ্গারামপুরে একদা সিপিএমের দোর্দন্ডপ্রতাপ নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী নারায়ণ বিশ্বাস অভিযোগ করেন, ‘‘যে কায়দায় গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় শাসক দল প্রার্থীদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে সন্ত্রাসের পরিবেশ তৈরি করেছিল, একইভাবে পুরভোটেও তা শুরু হয়েছে। তবে আমরা ময়দান ছেড়ে যাব না। কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের, হুমকি, আক্রমণ হবে জেনেও আমরা কর্মীদের শীঘ্রই ভোটের প্রচারে নামাবো।
বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক শুভেন্দু সরকার বলেন, গত সপ্তাহে ৬ নম্বর ওয়ার্ডে দলীয় নেতার বাড়িতে আয়োজিত কর্মীসভায় ঢুকে তৃণমূলের এক প্রার্থী দলবল নিয়ে যেভাবে হামলা চালিয়েছেন, তাতে একাংশ কর্মী সমর্থকের মধ্যে ভীতি তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।
এলাকায় প্রচারে নামতেই শাসক দলের কর্মীরা হুমকি দিচ্ছে। সে কারণে প্রচারের সমস্ত কর্মসূচি পুলিশকে জানিয়ে প্রার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তারপরেও হুমকি হামলা হলে পথ অবরোধ এবং মহকুমা শাসকের অফিসে ধর্ণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গঙ্গারামপুরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘৬ নম্বর ওয়ার্ডে ওই হামলার ঘটনায় নির্দিষ্ট করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্তও শুরু হয়েছে। পুরভোটের প্রচারে বাধা দেওয়া ও অশান্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বাম আমল থেকেই গঙ্গারামপুর পুরসভা সিপিএমের দখলে। বিগত বোর্ডও ছিল তাদের। ফলে তৃণমূলের মূল প্রতিপক্ষ এখানে সিপিএম। গত লোকসভা ভোটের নিরিখে কয়েকটি ওয়ার্ডে বিজেপি দ্বিতীয় স্থানে ছিল। কিন্তু বিরোধী দুই দলই ভোটযুদ্ধের প্রচারের এখনও না নামায় ভোটের উত্তাপ থেকে অনেক দূরে গঙ্গারামপুর।