আন্দোলনে ক্ষতির অঙ্ক ছুঁল ২৫ কোটি

ট্রাক মালিকরা জানাচ্ছেন, শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা এবং অসমের দিকে চলাচল করছে না বেশিরভাগ ট্রাক। বেশ কিছু মাঝ রাস্তায় ফেঁসে রয়েছে। 

Advertisement

শান্তশ্রী মজুমদার

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:০২
Share:

নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।—ছবি এএফপি।

কখনও জ্বলছে ট্রেন, বাস। কখনও বাস লক্ষ্য করে উড়ে আসছে পাথর। মুহুর্মুহু চলছে পথ অবরোধ। এ রকম পরিস্থিতিতে ট্রেন পরিষেবা তো বন্ধ রয়েইছে। সড়ক পথে উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে যাতায়াতকারী ট্রাক পরিবহণেও সেই আতঙ্কের ব্যাপক প্রভাব পড়তে শুরু করল। শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা এবং অসমের দিকে যাতায়াতকারী অন্তত তিনশো ট্রাক বসে গিয়েছে। প্রায় বন্ধ দক্ষিণবঙ্গ থেকে আসা ভোজ্য তেল, ইলিশ মাছ, হার্ডওয়ার। উত্তরবঙ্গ থেকে রফতানি বন্ধ হয়েছে চা, কমলালেবু, এলাচ, আদার মতো সামগ্রী। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির দাবি, গত কয়েক দিনে সার্বিক ব্যবসার ক্ষতি হয়েছে অন্তত ২৫ কোটি টাকা। গত রাতে থেকে কাটিহার ডিভিশনে মালগাড়ি চালানো শুরু হয়েছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীরা খানিকটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। এ কদিন তাও বন্ধ ছিল।

Advertisement

ট্রাক মালিকরা জানাচ্ছেন, শিলিগুড়ি থেকে কলকাতা এবং অসমের দিকে চলাচল করছে না বেশিরভাগ ট্রাক। বেশ কিছু মাঝ রাস্তায় ফেঁসে রয়েছে।

শিলিগুড়ি রোড ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক অরবিন্দ ঘোষ বলেন, ‘‘চালকরা ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নামতে চাইছেন না। তা ছাড়া বুকিংও বন্ধ। এর মধ্যে সামগ্রীসহ ট্রাক জ্বললে হয়তো বিমার টাকা মিলবে। কিন্তু ঝুঁকি কে নেবে?’’ কয়েক জন মাত্র ব্যবসায়ী ঝুঁকি নিয়ে ট্রাক চালাচ্ছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, কমলালেবুর মরসুম এখন। গাড়ি গাড়ি লেবু কলকাতার দিকে পাড়ি দেয়। কিন্তু এখন তা প্রায় বন্ধ। শিলিগুড়ি থেকে নিয়মিত ভাবে চা রফতানি হয় কলকাতার দিকে। তা ছাড়াও পাহাড়ের এলাচ, অসম এবং সিকিম থেকে আসা আদাও রফতানি হয় উত্তরবঙ্গ থেকে। সেগুলি যাচ্ছে না। রাস্তার পরিস্থিতি ভাল নয় বলেই আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং দিঘা থেকে রোজ কয়েক টন ইলিশ মাছ আসে শিলিগুড়িতে। উত্তরবঙ্গে মাছ রফতানির পাইকার তথা দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দা জয়দেব হাতি বলেন, ‘‘মাছ আগের চেয়ে কমেছে। স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করছি পরিস্থিতির জন্য।’’

মাছের সঙ্গে সঙ্গে ভোজ্য তেল এবং হার্ডওয়্যারের সরবরাহ কলকাতার দিক থেকেই হয় শিলিগুড়িতে। ট্রাক বন্ধে সেগুলির বাজারেও ব্যাপক টান পড়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। গত কয়েক দিনে ব্যবসা প্রায় ৪০ শতাংশ নেমে গিয়েছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ী সংগঠন ফোসিনের কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দাস। তিনি বলেন, ‘‘বাজার ভাল নয়। তার উপর সড়ক পরিবহণের এরকম অবস্থা হলে তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব অনেকটাই বাড়বে।’’ হোসিয়ারি সামগ্রী এবং ফল রফতানি এখনও বন্ধ বলেই দাবি। কাটিহার ডিভিশনে মালগাড়ি চলা শুরু হওয়ায় খানিকটা স্বস্তির নিঃস্বাস ফেলছেন অনেকে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement