বালুরঘাট ডেঙ্গির সঙ্গে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসের (জেই) প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুরে। ইতিমধ্যে তপন ব্লকের আউটিনা অঞ্চলের লস্করহাট এলাকায় জেই-তে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন সপ্তমী বর্মন নামে এক গৃহবধূ। জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত মোট ১৩ জন। তবে সকলেই সুস্থ বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি।
জেলার উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশোক বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত বছর ডিসেম্বরে জেলা জুড়ে এনসেফ্যালাইটিস প্রতিরোধে টিকাকরণ কর্মসূচি অভিযান হয়েছিল। ওই গৃহবধূ সেই সময় টিকা নেননি বলে অভিযোগ। ফলে জাপানি এনসেফ্যালাইটিসে আক্রান্ত হয়ে বেশ কিছুদিন বালুরঘাট হাসপাতালের সিসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি থাকার পর গত শনিবার তাঁর মৃত্যু হয়।’’ আট এবং দু’বছরের দুই সন্তান রয়েছে ওই মহিলার। পরিবার সূত্রের খবর, দুই শিশু-সহ বাড়ির অন্য সদস্যদের অবশ্য জেই-র ভ্যাকসিন নেওয়া রয়েছে। এলাকার আশা কর্মীর রিপোর্ট থেকে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানতে পেরেছে, একাধিকবার বোঝানো সত্ত্বেও সপ্তমী সেই সময় ভ্যাকসিন নেননি। মৃত ওই মহিলার প্রতিবেশীদের কয়েকজন শুয়োর পালন করেন। তাছাড়া, ধানের জমিতে জমা জলে মশার বংশবৃদ্ধি বেশি হয় বলে এই সময়টা সকলকে রোগ প্রতিরোধে সতর্ক করতে সচেতনার প্রচার শুরু হয়েছে লস্করহাট এলাকায়।
আউটিনা অঞ্চলের যশুরাপাড়া এলাকায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র অলোক বর্মন এবং বছর পঁয়তাল্লিশের সুকরা ওঁরাও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত বলে জানা গিয়েছে। এলাকায় বেশ কয়েকজন জ্বরে আক্রান্ত। তাঁদের রক্ত পরীক্ষা করে চিকিৎসা চলছে বলে স্থানীয় উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র জানিয়েছে।
তবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সুকুমার দে বলেন, ‘‘গত বছর অগস্টে এনসেফ্যালাইটিসে ছ’জন আক্রান্ত হয়েছিলেন। দু’জনের মৃত্যু হয়। এবারে এখনও পর্যন্ত একজনের মৃত্যু হল।’’ তিনি জানান, রোগ প্রতিরোধে ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য কর্মীরা লস্করহাট এলাকায় গিয়ে কাজ শুরু করেছেন। আশা কর্মীরাও বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করছেন। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বালুরঘাটে ৩ জন, কুমারগঞ্জে ২ জন, গঙ্গারামপুরে ২ জন, হরিরামপুরে ১ জন, কুশমণ্ডিতে ২ জন এবং তপনে ৩ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। দ্রুত চিকিৎসা শুরু হওয়ায় সকলেই বিপন্মুক্ত বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের।