জোট বার্তা। কংগ্রেস প্রার্থী সুখবিলাস বর্মার সমর্থনে পথে বিমান বসু। জলপাইগুড়িতে। ছবি: সন্দীপ পাল।
কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেসে শনিবার সকালে জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে নেমেছেন কংগ্রেসের রাজ্য নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্র। তারপর প্রস্তুতি নিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদারের সঙ্গে আসেন রেসকোর্স পাড়ায়। এখান থেকেই বিমান বসুর সঙ্গে প্রার্থী সুখবিলাস বর্মার সমর্থনে মিছিল করবেন।
সওয়া ন’টার সময় এসেই প্রশ্ন করলেন, ‘‘বিমানদা কোথায়?’’ বিমান বসু তখনও এসে পৌঁছননি। নির্বাচনী কার্যালয়ের বাইরে পাশে গিয়ে প্রার্থী সুখবিলাস বর্মার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথাবার্তা সেরে নিচ্ছিলেন। কংগ্রেস এবং বাম সমর্থকেরা সকাল থেকে এসে এখানে জড় হয়েছেন।
বিমান বসু এলেন সকাল সাড়ে ন’টায়। এসে প্রয়াত সিপিএম সদস্য সুদীপ্ত গুপ্তর ছবির সামনে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করেন। সেখানে একে একে পুষ্পার্ঘ্য দেন ওমপ্রকাশ মিশ্র, সুখবিলাস বর্মা এবং উপস্থিত কংগ্রেস এবং সিপিএম নেতারা। ন’টা বেজে পঁয়ত্রিশ মিনিটে মিছিল শুরু হল। সামনে বিমান বসু, ওমপ্রকাশ মিশ্র, প্রার্থী সুখবিলাস বর্মা, সিপিএমের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক সলিল আচার্য, জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য জীতেন দাস, ফরওয়ার্ড ব্লকের গোবিন্দ রায় এবং আরও অনেকে। মিছিল এগিয়ে চলল। রেসকোর্স পাড়া থেকে মিছিল শুরু হয়ে পোস্ট অফিস মোড় থানা মোড় হয়ে মিছিল এগিয়ে চলল। দুই কিলোমিটার হাঁটার পরে বিমানবাবু কদমতলা মোড়ে এসে মিছিল থেকে বার হয়ে সিপিএমের জেলা পর্টি অফিসে চলে গেলেন। কারণ, এ দিন তাঁর কলকাতায় ফেরার তাড়া ছিল।
কংগ্রেস, বাম নেতৃবৃন্দ এবং অগণিত বাম এবং কংগ্রেস নেতাদের নিয়ে মিছিল চলল। উকিলপাড়া, শিল্পসমিতি পাড়া, শান্তিপাড়া হয়ে মিছিল শিরিষতলায় গিয়ে শেষ হল। মোট চার কিলোমিটার পথ পার হতে মিছিলটির সময় লাগলো সোয়া ঘণ্টা। মিছিলের শেষে ওমপ্রকাশ মিশ্র বলেন, “উড়ালপুল ভেঙে পড়ার আগে শ্রমিকেরা সতর্ক করেছিল। এখন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সবাই বলেছেন নকশায় ভুল ছিল। গত পাঁচ বছর ধরে তৃণমূল সরকারে আমলে উড়ালপুলটি নির্মিত হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম নানা বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। তাতে ওদের মাথা হেঁট হয়েছে। তৃণমূল সরকার উড়ালপুল ভেঙে পড়ার জন্য দায়ী।” জোটের জয় সম্পর্কে তিনি বলেন, “জলপাইগুড়িতে বিমানবাবুর প্রচারে আলাদা মাত্রা যোগ হয়েছে। অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার ১২টি আসনে জোটপ্রার্থীরা ভাল ফল করবে।” মাঝপথে চলে গেলেও বিমানবাবু পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন, “হায়দরাবাদের সংস্থা কাজ পেলেও এক জন তৃণমূল বিধায়কের পরিবারের লোক কী করে কাজ পায়? এক জন তৃণমূল সাংসদ বলছেন যে তিনি নকশার কিছু পরিবর্তন দাবি করেছিলেন।” মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হেলিকপ্টারে প্রচারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “হেলিকপ্টারের ভাড়া কে দিচ্ছে? চিটফান্ডের টাকা ভালই আছে। রাজ্যের মানুষ দেখছে। তারাই বিচার করবে।”