উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ফাইল চিত্র
টিম পিকের সামনেই পুরনো কর্মীদের অনেকেই হাজির হলেন স্বীকৃতি সম্মেলনে। নেতার হাত থেকে সংবর্ধনাও নিলেন। ফেরার পথে নেতাকে বলে গেলেন, ‘গোষ্ঠীকোন্দল বন্ধের ব্যবস্থা করুন। না হলে সমূহ বিপদ।’ নেতা অবশ্য সঙ্গে সঙ্গেই বললেন, “সবাই মিলেই কাজ করতে হবে।”
রবিবার কোচবিহার জেলা পার্টি অফিসে নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দের স্বীকৃতি সম্মেলন হয়। ওই কেন্দ্রের বিধায়ক উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। তাঁকেও পুরনো কর্মীদের কয়েকজন এমনই অভিযোগ জানান। মন্ত্রী বলেন, “কোন্দলের কোনও বিষয় নেই। পুরনো কর্মীদের অনেকে বয়সের কারণে, স্বাস্থ্যের কারণে কোথাও পাশাপাশি কোনও কর্মীর সঙ্গে মতবিরোধের জেরে বসে গিয়েছিলেন। সবাই একসঙ্গে কাজ করবেন।” তিনি জানান, এ দিন ১৫০ জন পুরনো কর্মীকে হাজির করে সংবর্ধনা দেন তিনি।
কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রেও তৃণমূলের স্বীকৃতি সম্মেলন হয়। সেখানে দায়িত্বে ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ পার্থপ্রতিম রায়। ওই সভাতেও কর্মীদের অনেকেই ক্ষোভ জানান। সামনে আসে দলের বিরোধও। সেখানে দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি জেলা পরিষদ সদস্য পরিমল বর্মণ উপস্থিত ছিলেন না। পার্থ জানান, ওই সভায় পুরনো কর্মী পুন্ডিবাড়ির, দুলাল দেব, বড়রাংসের ননীগোপাল ঘোষ, মহিলা তৃণমূলের প্রাক্তন জেলা সভানেত্রী নমিতা রায় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “দ্বন্দ্বের বিষয় নেই। অনেকে ক্ষুব্ধ ছিলেন। প্রত্যেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। আর পরিমলবাবুর থাকতে পারবেন না বলে আগেই জানিয়েছেন।” শুধু পরিমল নয়, তাঁর অনুগামীদের অনেকেই ওই মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন না বলে বলে দলীয় সূত্রের খবর। পরিমল বলেন, “আমার অন্য কর্মসূচি থাকায় যেতে পারিনি।”
কোচবিহারে তৃণমূলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অনেক পুরনো। যার জেরেই পুরনো কর্মীদের অনেকেই বসে গিয়েছেন। লোকসভা ভোটে হারের কারণ খুঁজতে গিয়ে এমনই তথ্য পায় টিম পিকে। সে তথ্যের ভিত্তিতেই পুরনোদের ফেরানো শুরু হয়। সে কারণেই দলনেত্রী ওই কর্মসূচি বেঁধে দেন। দিনকয়েক ধরে নিজের নিজের এলাকায় চষে বেরিয়েছেন মন্ত্রী-নেতারা। পুরনো কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় দেখা করেছেন। সাড়াও দিয়েছেন পুরনো অনেকেই। তার পরেও তাঁদের মনের ক্ষোভ বা অভিমান যে পুরোপুরি মিটে যায়নি তা স্পষ্ট করেছেন অনেকেই।