(বাঁ দিক থেকে) দেবেন্দ্র ফডণবীস, একনাথ শিন্ডে এবং অজিত পওয়ার। —ফাইল চিত্র।
ফলপ্রকাশের পর দু’দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু মহারাষ্ট্রের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রীর নাম এখনও চূড়ান্ত হয়নি। রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ অবশ্য থেমে নেই। সেই সব ঘটনা বিশ্লেষণ করে নানা জন নানা রকম দাবি করছেন। যদিও বিজেপি এই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। বরং ‘ধীরে চলো’ নীতি নেওয়ারই ইঙ্গিত দিয়েছে তারা। ‘মহাজুটি’ জোটের অন্য দুই শরিক শিবসেনা (শিন্ডে) এবং এনসিপি (অজিত) অবশ্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান ঠারেঠোরে বুঝিয়ে দিয়েছে।
সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ দিল্লি যান বিজেপি নেতা দেবেন্দ্র ফডণবীস। বিজেপির একটি সূত্র মারফত দাবি করা হয়, সরকার গঠনের বিষয়ে দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলতেই মুম্বই থেকে দিল্লি উড়ে গিয়েছেন ফডণবীস। শোনা গিয়েছিল, অমিত শাহের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। ফডণবীস নিজে অবশ্য দাবি করেছেন, লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার মেয়ের বিয়েতে যোগ দিতেই তিনি দিল্লি গিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বৈঠক হওয়ার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও দাবি করেন মহারাষ্ট্রের বিদায়ী মন্ত্রিসভার উপমুখ্যমন্ত্রী।
তবে তাতে জল্পনা থামছে না। সোমবারই ‘বিহার মডেলের’ প্রসঙ্গ টেনে শিন্ডেসেনার মুখপাত্র নরেশ মাশকে বলেন, ‘‘বিহারে যেমন বিজেপি আসনসংখ্যার দিকে না-তাকিয়ে নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল, তেমনই এখানেও শিন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া উচিত।’’ শিন্ডেসেনার বিধায়ক এবং কর্মী-সমর্থকেরা শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করার দাবি জানালেও মহারাষ্ট্রের বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রী নিজে অবশ্য সকলকে সংযত থাকার বার্তা দিয়েছেন।
সোমবার গভীর রাতে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন শিন্ডে। সেখানে তিনি কর্মীদের সংযত থাকার অনুরোধ করেন এবং বর্ষা ভবনের (মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন) সামনে জড়ো না-হওয়ার আর্জি জানান। তিনি লেখেন, ‘‘আমি আপনাদের ভালবাসায় অভিভূত। কিন্তু আরও এক বার আপনাদের বিনীত অনুরোধ করছি, শিবসেনা কর্মীরা বর্ষা নিবাস বা অন্য কোথাও জমায়েত করবেন না।’’ শাসকজোট মহাজুটি মহারাষ্ট্রের আরও উন্নতি এবং সমৃদ্ধি ঘটাবে বলেও জানান তিনি।
বিজেপির একটি সূত্রের অবশ্য দাবি, সোমবার গভীর রাত পর্যন্ত ফডণবীসের সঙ্গে বৈঠক করেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। শিন্ডেকে মুখ্যমন্ত্রী করা না-হলে জোট কী প্রভাব পড়তে পারে, তাই নিয়েও নাকি আলোচনা হয়। ভিতরে তাপ-উত্তাপ বৃদ্ধি পেলেও প্রকাশ্যে অন্তত দুই দলই এককাট্টা থাকার বার্তা দিচ্ছে। আর জোটের তৃতীয় বৃহত্তম শরিক অজিত পওয়ারের এনসিপি আগেই ফডণবীস মুখ্যমন্ত্রী হলে সমর্থন দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে।
মঙ্গলবারই মহারাষ্ট্র বিধানসভার মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন, এই প্রশ্নে দ্রুত ঐকমত্য না-হলে রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ‘মহাজুটি’ নেতাদের একাংশ।