নগদের টানে তেলের আকাল, চাঁচলে সঙ্কটে ৮০টি মাতৃযান

নগদ টাকার আকালে এ বার সঙ্কটে স্বাস্থ্য দফতরের জননী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের অধীন মাতৃযানও। প্রসূতি ও এক বছর বয়সী শিশুদের নিখরচায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য প্রতিটি ব্লকেই মাতৃযান রয়েছে। মালদহের চাঁচল মহকুমার ছ’টি ব্লকে রয়েছে ৮০টি মাতৃযান। প্রতিটিতে দিনপ্রতি গড়ে দু’হাজার টাকার তেল প্রয়োজন হয়।

Advertisement

বাপি মজুমদার

চাঁচল শেষ আপডেট: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৫৫
Share:

নগদ টাকার আকালে এ বার সঙ্কটে স্বাস্থ্য দফতরের জননী ও শিশু সুরক্ষা কার্যক্রমের অধীন মাতৃযানও। প্রসূতি ও এক বছর বয়সী শিশুদের নিখরচায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য প্রতিটি ব্লকেই মাতৃযান রয়েছে। মালদহের চাঁচল মহকুমার ছ’টি ব্লকে রয়েছে ৮০টি মাতৃযান। প্রতিটিতে দিনপ্রতি গড়ে দু’হাজার টাকার তেল প্রয়োজন হয়। মাস ফুরোলে চেক-এ তা মিটিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর টাকা মিটিয়ে দিলেও নগদের সমস্যায় মাতৃযান চালানো নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন মালিকর। কেননা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা মিলছে না। এই পরিস্থিতিতে নগদ টাকার ব্যবস্থা করা বা বকেয়া মেটাতে ব্যাঙ্ক যাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়, তা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতর উদ্যোগী হোক বলেও দাবি উঠেছে।

Advertisement

যদিও মালদহের সিএমওএইচ দিলীপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘নগদের অভাবে নানা ক্ষেত্রেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। মাতৃযানের ক্ষেত্রে নগদ টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। কোনও সুরাহা করা যায় কি না, তা নিয়ে ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলব।’’

স্বাস্থ্য দফতর জানায়, প্রতিটি ব্লক হাসপাতালেই নথিবদ্ধ মাতৃযান রয়েছে। চুক্তির ভিত্তিতে গাড়িগুলি নেওয়া হয়। মাতৃযানের নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত ছাড়াও বিভিন্ন উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র, আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদের কাছেও রয়েছে। পুরোটাই অবশ্য স্বাস্থ্য দফতরের অধীনে নিয়ন্ত্রিত হয়। কিলোমিটার হিসেবে মাসের শেষে চেকে তাদের ভাড়া মিটিয়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

স্বাস্থ্য দফতর জানায়, প্রসূতিদের নিয়ে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাতায়াতের পাশাপাশি এক বছর পর্যন্ত শিশুদেরও সমস্যায় একই ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাতায়াত করে মাতৃযান। প্রসূতিদের প্রতিষ্ঠানমুখী করতে আনন্দী প্রকল্প চালু হওয়ার পর হাসপাতালে প্রসবের হারও কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। এ ছাড়া শীত পড়ায় শিশুদের নিউমোনিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় মাতৃযানেরও ব্যবহার প্রচুর বেড়েছে। ফলে এখন গড়ে প্রতিদিন প্রতিটি মাতৃযানে দু’হাজার টাকার তেল প্রয়োজন হয়। মাস ফুরোলেই স্বাস্থ্য দফতরের তরফে তার চেক দিয়ে দেওয়া হয়।

স্বাস্থ্য দফতর ও মাতৃযান মালিকদের সূত্রে জানা গিয়েছে, মাতৃযান বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গ্রাম এলাকায় ব্যবহার হয়। সেখানে পাম্পে সোয়াইপ মেশিন নেই। ফলে পাম্প থেকে নগদ টাকায় তেল কিনতে হয়। কিন্তু ব্যাঙ্কে চেক জমা দিয়েও প্রয়োজনীয় টাকা মিলছে না।

হরিশ্চন্দ্রপুরের দু’টি মাতৃযানের মালিক অসিত দাস, সাহেব আলি বলেন, ‘‘মাসের প্রথমে আমাদের পুরো টাকাটাই তুলে নিতে হয়। কেননা চালকের মাইনে, গাড়ির কিস্তি রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদিন তেল কেনার টাকা মজুত রাখতে হয়। এখন ব্যাঙ্কে গিয়ে কখনও পাঁচশো পাওয়া যাচ্ছে, কখনও তা-ও মিলছে না। ধারদেনা করে মাতৃযান চালাচ্ছি। কিন্তু আর ক’দিন চালানো সম্ভব হবে জানি না।’’

হরিশ্চন্দ্রপুরের বিএমওএইচ ছোটন মণ্ডল বলেন, ‘‘অনেকেই সমস্যার কথা জানিয়েছেন। কিন্তু আমরাও অসহায়। যে ভাবেই হোক ওদের মাতৃযান যেন বন্ধ না হয়, তা দেখতে বলেছি।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement