দক্ষিণ দিনাজপুরে রোজ লাফিয়ে বাড়ছে হোম কোয়রান্টিনের সংখ্যা। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত জেলায় কোয়রান্টিনে রয়েছেন ৯ হাজার ৫৭৩ জন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মূলত ভিন্রাজ্য ফেরত শ্রমিকদেরই এ ভাবে কোয়রান্টিনে পাঠানো হচ্ছে। তারা জানায়, অনেক ক্ষেত্রেই ভিন্রাজ্য থেকে ফিরে অনেকে আত্মগোপন করে থাকছেন। এরপর বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে স্বাস্থ্য দফতর থেকে তাঁদের চিহ্নিত করে বাড়িতে এবং ব্লকের কোয়রান্টিন কেন্দ্রে ভর্তি করানো হচ্ছে। জেলার কুমারগঞ্জে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে বলে খবর। ইতিমধ্যে নদীয়ার চাকদা এবং দিল্লির নিজামুদ্দিন ফেরত ৪ জন ও তাঁদের আত্মীয় আরও ১০ জন, মোট ১৪ জনকে খোঁজাখুঁজির পর বুধবার রাতে কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে আইটিআই কলেজ ও অনু্ঠান ভবনে তৈরি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে করোনা উপসর্গ সন্দেহে ৫৬ জনকে রাখা হয়েছে।
করোনা-সন্দেহে জেলা ও মহকুমা হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি ৪ জনের মধ্যে শুক্রবার তিন জনের সোয়াব পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। জেলা মুখ্য স্বাস্হ্য আধিকারিক সুকুমার দে জানান, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁদের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এ দিন ওই তিন জনের করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। একজনকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছে। তবে বালুরঘাট হাসপাতালের বহির্বিভাগের ফ্লু ক্লিনিকে এখনও রোজই জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে গড়ে প্রায় ৩০০ রোগী চিকিৎসা করাতে আসছেন। এঁদের মধ্যে অনেকেই ভিন্রাজ্য ফেরত শ্রমিক। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এলাকাবাসীর চাপে অনেকে ডাক্তার দেখিয়ে গ্রামে গিয়ে বলছেন তাঁদের করোনা হয়নি। অনেকে আবার বহির্বিভাগের কাগজ দেখিয়ে দিব্যি এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
তবে অনেক বাসিন্দা আবার বলছেন, ওই শ্রমিকদের তো কিছু করারও নেই। বাইরে থেকে ফিরে এমনিতেই হাতে টাকা নেই। ঘরে ফুরোচ্ছে খাবারও। আর রেশন হোক বা অন্য কোনও জায়গা, সেখানেও খাবার আনতে হলে বেরোতে হবে। সেখানে যদি কোয়রান্টিনে যেতে হয় সেটাও বন্ধ হয়ে যাবে। প্রশাসন যদি প্রত্যেকের বাড়িতে খাবার পৌঁছনোর বন্দোবস্ত করত তা হলে হয়ত পরিস্থিতি কিছুটা হলেও ভাল হত, মত তাঁদের।