ছট পুজো। —ফাইল চিত্র।
ছটপুজোর ব্যতিক্রমী রাত-ভোর দেখল জলপাইগুড়ি জেলা। এ বছর বাজির বিকট শব্দের অত্যাচার মোটের উপরে সইতে হয়নি জলপাইগুড়ি জেলার বাসিন্দাদের। অতীতে ছটপুজোর বিকেল থেকে সারারাত এবং পরদিন ভোর পর্যন্ত দেদার শব্দবাজিতে কান ঝালাপালা হওয়ার জোগাড় হয়েছে বাসিন্দাদের। জেলার চারটি পুরসভা এলাকায় এ বছর শব্দবাজির দাপট ছিল না বললেই চলে। গ্রামীণ কিছু এলাকায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি পুড়েছে বলে অভিযোগ। তা-ও অন্য বারের মতো যথেচ্ছ নয় বলে দাবি। পরিবেশকর্মীদের দাবি, সার্বিক ভাবে পুজো কমিটিগুলি সচেতন হওয়ায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি পোড়ানো বন্ধ করতে পেরেছে প্রশাসন।
জলপাইগুড়ির কিংসাহেবের ঘাট, সমাজপাড়া ঘাট থেকে ময়নাগুড়ির জর্দা নদীর ঘাট, ধূপগুড়ির ঘাট, মাল নদীর ঘাটে আতশবাজি পুড়েছে দেদার। ডিজে-বক্সও বেজেছে। কিন্তু শব্দবাজি পোড়েনি। বৃহস্পতিবার গভীর রাতেও নিষিদ্ধ বাজির শব্দ শোনা যায়নি, ভোরে আকাশে ফানুস উড়েছে, কিন্তু বাজির শব্দে বুক কেঁপে ওঠেনি পুজো দেখতে ঘাটে আসা হাজার-হাজার দর্শনার্থীদের। জলপাইগুড়ির একটি পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের মুখপাত্র রাজা রাউত বলেন, “মোটের উপরে মানুষ সচেতন হয়েছেন। না হলে শুধু কড়াকড়ি করে শব্দবাজি রোখা যেত না।’’
ধূপগুড়ির ছটপুজো কমিটির কর্মকর্তা রাজকিশোর সিংহ বলেন, “সরকারি নির্দেশে যে বাজিগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছিল, সেগুলি পোড়ানো হয়েছে। যেহেতু প্রশাসনের তরফ প্রথম থেকেই নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে সচেতন করা হয়েছিল, সে কারণে আমরাও নজরদারি চালিয়েছি।’’ সবুজ বাজি বলে স্বীকৃত আলোর বাজি পুড়েছে, সেই বাজিতেও শব্দ হয়েছে। জলপাইগুড়ির জেলা পুলিশ সুপার উমেশ গণপত খণ্ডবহালে বলেন, “কাউকে শব্দবাজি পোড়াতে দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকর্মীরা সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। খুবই নিবিড় ভাবে নজরদারি হয়েছে। তবে এ বার শব্দবাজি পোড়ানোর প্রবণতা কম ছিল। মানুষ যে পুলিশের অনুরোধে সাড়া দিলেন, সেটাই বড় কথা।”
জলপাইগুড়ি জেলার এক বাজি ব্যবসায়ীর কথায়, “নিষিদ্ধ শব্দবাজির চাহিদা যে ছিল না, তা নয়। অনেকেই এসে নিষিদ্ধবাজি চেয়েছেন। কিন্তু কালীপুজোর আগে থেকে নিষিদ্ধ বাজি জেলায় ঢোকায় এত কড়াকড়ি নজরদারি ছিল যে সেগুলি যথেষ্ট পরিমাণে মেলেনি।” শহর এলাকায় নিষিদ্ধবাজি না পুড়লেও ক্রান্তি, মৌলালি-সহ লাগোয়া গ্রামীণ এলাকায় ইতিউতি নিষিদ্ধ বাজি পুড়েছে বলে অভিযোগ।