—প্রতীকী চিত্র।
উত্তরের বনাঞ্চল জুড়ে রেলপথে কার্যকর হতে চলেছে ‘ইন্ট্রুশন ডিটেকশন সিস্টেম’। বন্য প্রাণীরা রেল লাইনের কাছাকাছি চলে এলে সতর্ক করার স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা। বন দফতরের তরফে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল রেল মন্ত্রককে। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেল সূত্রে খবর, বন দফতরের প্রস্তাবে সম্মতি রয়েছে রেল বোর্ডেরও। শিলিগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ার পর্যন্ত ১৬৮ কিলোমিটার রেলপথে অপটিক্যাল ফাইবারের ‘ইন্ট্রুশন ডিটেকশন’ ব্যবস্থা কার্যকর হবে। ইতিমধ্যে বিন্নাগুড়ি-ক্যারণ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা রয়েছে। তার মাধ্যমে হাতি বা অন্য বন্য প্রাণীর দল রেললাইনের আশপাশে চলে এলেই, কাছাকাছি স্টেশন কর্তৃপক্ষের কাছে সঙ্কেত ফৌঁছে যায়। বন দফতরের দাবি, এই ব্যবস্থা কার্যকর হলে হাতি-সহ অন্য প্রাণীর ট্রেনের ধাক্কায় মৃত্যু রোখা সম্ভব হবে।
উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কপিঞ্জল কিশোর শর্মা বলেন, “বন্য প্রাণীদের মৃত্যু এড়াতে রেলপথে স্বয়ংক্রিয় সতর্কীকরণ ব্যবস্থা উত্তরবঙ্গের পুরো রেলপথে বসানোর প্রস্তাব রয়েছে।” রেল সূত্রে খবর, অপটিকাল ফাইবার নিয়ন্ত্রিত এই ব্যবস্থায় রেলপথের দু’দিকে অন্তত ২০ মিটার দূর পর্যন্ত বন্য প্রাণীরা চলে এলে সতর্কতার সঙ্কেত পাঠানো শুরু হবে। রেলপথে বন্য প্রাণীদের উঠে আসার তথ্য পেতে নানা ‘সেন্সর’-ব্যবস্থা রয়েছে। এই ব্যবস্থার নানা ‘মডেল’ রয়েছে। রেলপথের আশপাশে বন্য প্রাণীর উপস্থিতি টের পেতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হয়েছে। রাতে রেলপথের
কাছাকাছি বিশেষত হাতি চলে এলে সেই ব্যবস্থায় তা ধরা পড়ে।
উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) জেভি ভাস্কর বলেন, “রেলের ইন্ট্রুশন ব্যবস্থা সব থেকে কার্যকর বলে দেখা গিয়েছে। এখন রেলপথের ২৮-৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত এই ব্যবস্থা রয়েছে। আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত পুরো রেলপথেই স্বয়ংক্রিয় ওই ব্যবস্থা কার্যকরের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।”
উত্তরবঙ্গের রেলপথে ট্রেনের ধাক্কায় সাম্প্রতিক অতীতে সত্তরটিরও বেশি হাতির মৃত্যু হয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনা ঘটেছে রাতে। হাতির মৃত্যু ঠেকাতে ওই রুটে ট্রেনের গতিও কমানো হয়েছে৷ তার পরেও ট্রেনের ধাক্কায় বন্য প্রাণীর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব হয়নি। সম্প্রতি ট্রেনের ধাক্কায় অন্তঃসত্ত্বা হাতির মৃত্যু হয়। রেল সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গের পুরো জঙ্গলপথে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা কার্যকরের পরে, অসমেও একই ‘মডেল’ অনুসরণ করা হবে।