গবেষক-ছাত্রী ববিতা দত্তের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এবিভিপি) ডাকা ছাত্র ধর্মঘটে কার্যত ‘অচল’ হল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। সোমবার বেলা সাড়ে ৯টা নাগাদ এবিভিপি’র নেতা-সমর্থকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ওয়াচ অ্যান্ড ওয়ার্ড’-এ তালা দিয়ে দেন। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের চাবি থাকে। পরে, নিরাপত্তা আধিকারিক চাবি বার করে বিভিন্ন বিভাগকে দিলেও এবিভিপি সেখানে গিয়ে বাধা দেয়। ফলে শিক্ষক, পড়ুয়ারা এলেও এ দিন বেশিরভাগ বিভাগ না খোলায় ক্লাস হয়নি। টিএমসিপি’র তরফে বিজ্ঞান বিভাগ খোলানো হয়। কিছু পড়ুয়া ছিল। তবে সে ভাবে ক্লাস হয়নি। আইন বিভাগের কিছু কাজের জন্য ফিনান্স বিভাগ কিছু ক্ষণের জন্য খোলা হলেও এবিভিপি-র লোকজন গেলে, ফের বন্ধ করা হয়।
এবিভিপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শুভব্রত অধিকারী বলেন, ‘‘গবেষক ছাত্রীর মৃত্যুতে অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে এ দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র ধর্মঘট সর্বাত্মক হয়েছে। এই প্রথম আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্মঘট করলাম।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী রেজিস্ট্রার ছুটিতে রয়েছেন। জয়েন্ট রেজিস্ট্রার স্বপন রক্ষিত সেই দায়িত্বে। তিনিও কাজে দার্জিলিং ছিলেন। দুপুরে তিনি ফোনে বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিভাগ বন্ধ খোলা যায়নি, তা আমাকে কেউ জানায়নি। খোঁজ নিচ্ছি। এ সময় বিভিন্ন বিভাগ বন্ধ থাকলে পড়াশোনা, কয়েকটি বিভাগের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা ব্যাহত হবে। আন্দোলনকারীদের আলোচনার জন্য সব সময় বলা হয়েছে। তাঁদের দেখতে হবে, যাতে পড়াশোনা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।’’ তাঁর দাবি, পুলিশ যেমন তদন্ত করছে, তেমনই বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পরিবারের তরফে অভিযোগ জানানোর পরে ইন্টারন্যাল কমপ্লেন কমিটি (আইসিসি) তা খতিয়ে দেখছে।
তবে এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিষোগিতাও ছিল। তাকে ছাত্র ধর্মঘটের আওতার বাইরে রাখা হয়েছিল। নিরাপত্তা বিভাগের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক অমিতাভ দেব বর্মণ বলেন, ‘‘বিভিন্ন বিভাগ খোলার জন্য পরে চাবি বার করে আমরা দিয়েছিলাম। তবে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে খুলতে বাধা দিয়েছেন। তাতে অনেকে বিভাগ খোলেননি।’’
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের দায়িত্বে থাকা হরিপদ সিংহ বলেন, ‘‘ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে পরিবারের প্রতি আমাদেরও সহানুভূতি রয়েছে। তবে বহিরাগতদের নিয়ে এসে এবিভিপি ছাত্র ধর্মঘট পালনে হুমকি দিয়েছে।’’ অভিযোগ মানেনি এবিভিপি।