স্নান: গরমে স্বস্তি পেতে জলেই খেলা। ছবি: অমিত মোহান্ত।
গভীর নিম্নচাপ কেড়ে নিল গত কয়েকদিনের স্বস্তি। সোমবার তীব্র গরমে কাহিল উত্তরবঙ্গও। এতদিন দক্ষিণে দাবদাহ চললেও এতদিন উত্তরের তিন জেলার তাপমাত্রা ছিল আরামদায়ক। খানিকক্ষণ রোদের তেজ চললেই আকাশে মেঘ উড়ে এসেছে। স্বস্তি দিতে বৃষ্টিও হয়েছে। সমুদ্রে তৈরি হওয়া গভীর নিম্নচাপের টান সেই স্বস্তি কেড়ে তাপমাত্রা দক্ষিণের সঙ্গে মিলিয়ে দিল উত্তরকেও। নিম্নচাপ টেনে নিয়েছে উত্তরের মেঘ। মেঘমুক্ত আকাশে রোদের তেজ বেড়েছে। দাবদাহে ভোগান্তিও বেড়েছে বাসিন্দাদের।
এ দিন কলকাতার তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রির আশেপাশে ছিল, শিলিগুড়ির তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি। যদিও অনুভূত হয়েছে প্রায় ৩৮ ডিগ্রির তাপমাত্রার গরম।
বেলা যত বেড়েছে ততই বেড়েছে গরম। বিকেল সাড়ে ৫টাতেও সহরের বাতালে ছিল গরম হলকা। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার এমনকী পাহাড়ি এলাকাগুলিতেও তাপমাত্রা ছিল তুলনামূলক চড়া। এ দিন রোদের তেজ থেকে বাঁচতে ছাতা মাথায় স্থানীয়দের ঘুরতে দেখা গিয়েছে মিরিক বাজারে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর অবশ্য জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার থেকে ফের আবহাওয়া বদলাতে পারে উত্তরবঙ্গে। গভীর নিম্নচাপ ভূপৃষ্ঠে আছড়ে পড়লে ফের বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হবে উত্তরের জেলাগুলিতে। এ দিন সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকের তাপমাত্রাও ছিল ৩ ডিগ্রি বেশি। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘নিম্নচাপ আছড়ে পড়লে তার প্রভাবেই ফের বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি শুরু হতে পারে।’’
রোদের তেজে শিলিগুড়ির স্বাভাবিক ব্যস্ততাই যেন কমে এসেছিল এ দিন দুপুরে। হিলকার্ট রোডে পথচারীদের সংখ্যা এ দিন তুলনামূলক অনেক কম ছিল।
বিধান রোডে ফুটপাতে ডাব নিয়ে বসেন দীগেন বাড়ুই। দুপুর দেড়টার সময় সব ডাব ফুরিয়ে যায়। দীগেনবাবু জানান, অন্যদিন সন্ধে পর্যন্ত ডাব বিক্রি করেন। এ দিন, গরমের দাপটে বেশি বিক্রি হওয়ায় দুপুরের মধ্যেই সব ফুরিয়ে গিয়েছে।
বাতাসে গরমের ছ্যাঁকা ছিল জলপাইগুড়িতেও। গরমের মধ্যে অরবিন্দ নগর এলাকায় এ দিন সকালে ঘণ্টা তিনেক বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার সংস্কার এবং তার পরিবর্তনের জন্য এ দিন ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয় বলে জানানো হয়েছে।
এ দিন তাপমাত্রার উল্টো আচরণের কারণ ব্যাখ্যায় আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের ঘুর্ণাবর্তর জেরে উত্তরবঙ্গের আকাশে মেঘ জমেছিল। নিম্নচাপ সেই মেঘের সবটুকু টেনে নিয়ে গিয়েছে।