উত্তরবঙ্গই মান রাখল শিক্ষায়  

দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে দৌড়ে উত্তরবঙ্গের মুখ রাখল একমাত্র উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র‌্যাঙ্কিংয়ের (এনআইআরএফ) তালিকায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১৫০ থেকে ২০০-এর মধ্যে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০২০ ০৩:৩৪
Share:

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।

দেশের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে দৌড়ে উত্তরবঙ্গের মুখ রাখল একমাত্র উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের র‌্যাঙ্কিংয়ের (এনআইআরএফ) তালিকায় উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১৫০ থেকে ২০০-এর মধ্যে। প্রথম বার যোগ দিয়ে এই র‌্যাঙ্কিং যথেষ্ট ভাল বলেই মনে করছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষামহল। কিন্তু বাকিরা হয় দৌড়ে যোগই দেয়নি, অথবা প্রতিযোগিতায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। গৌড়বঙ্গ, পঞ্চানন বর্মার মতো নতুন বিশ্ববিদ্যালয় বা জলপাইগুড়ি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের মতো পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলি নিজেদের এই দৌড় থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। আর যোগ দিয়ে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ছ’শোরও নীচে।

Advertisement

প্রশ্ন উঠেছে, বছরের পর বছর উত্তরবঙ্গ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে ছেলেমেয়েরা প্রথম কুড়ির মধ্যে থাকেন, তাঁরা কি তা হলে কলকাতা, দিল্লি বা অন্য কোথাও পড়তে চলে যান? শিক্ষকমহলের বড় অংশের দাবি, তাঁদের বেশিরভাগই এখানকার বিশ্ববিদ্যালয় বা কলেজগুলিতে থাকতে চান না। গুণগত মান বা র‌্যাঙ্কিয়ে পিছিয়ে থাকাটাও তার জন্য দায়ী বলে মনে করেন তাঁরা। সে ক্ষেত্রে মানোন্নয়নে কেন তৎপরতার অভাব, তা নিয়ে সদুত্তর মেলেনি।

উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় কিন্তু তাদের র‌্যাঙ্কিংয়ে খুশি। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে বলা হচ্ছে, ১৫১ থেকে ২০০-এর মধ্যে এ বছর রাজ্যের দু’টি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, উত্তরবঙ্গ এবং দক্ষিণের বিদ্যাসাগর। রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকার বলেন, ‘‘প্রথম বার যোগ নিয়ে ১৫০-২০০ মধ্যে থাকাটা সাফল্যের। তবে অনেক ক্ষেত্রেই খামতি রয়েছে। উপাচার্য বিভিন্ন বিভাগের প্রধানদের সঙ্গে বসে নিশ্চয়ই আলোচনা করবেন। আগামী দিনে যাতে আরও ভাল হয়, তার চেষ্টা আমরা করব।’’

Advertisement

জলপাইগুড়ি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ অধ্যক্ষ অমিতাভ রায় জানান, ১৯৬১ সালে কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে আজ পর্যন্ত কখনও এই র‌্যাঙ্কিয়ের জন্য আবেদনই করা হয়নি। তবে আগামীতে অবশ্যই তাঁরা অংশ নেবেন। সেই প্রস্তুতি শুরু করা হয়েছে। রায়গঞ্জ ও কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ এক বছর চালু হয়েছে। তাঁরা র‌্যাঙ্কিংয়ের বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন। মালদহ মেডিক্যাল কলেজের ভাইস প্রিন্সিপ্যাল তথা সুপার অমিত দাঁ বলেন, ‘‘আমাদের এখানে শয্যা অনুসারে দ্বিগুণের বেশি রোগী থাকে। কী করে মান ঠিক রাখব। তাই আবেদনও করা হয় না।’’ উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ সুবর্ণ জয়ন্তীবর্ষ পার করেছে কয়েক বছর আগে। অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব বলেন, ‘‘আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনও তথ্য কখনও চাওয়া হয়নি। তাই বিষয়টি জানা নেই।’’ এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়।

এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটাই পিছনে রয়েছে। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসার স্বপন পাইনের দাবি, ‘‘রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাঙ্ক ৬৩৬। ২০১৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও ভাল করার চেষ্টা করা হবে।’’ গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বিপ্লব গিরি বলেন, ‘‘২০১৬-২০১৭ সালে কেন্দ্রের সমীক্ষায় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ১০০ র‌্যাঙ্কের মধ্যে ছিল। তারপর আবেদন করা হয়নি।’’ কোচবিহারের পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৩ থেকে চালু হয়। জাতীয় র‌্যাঙ্কিংয়ে অংশ নিতে যে মান দরকার, তার অনেক কিছুই নেই বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement