শিল্পমন্ত্রী নেই, হতাশ ব্যবসায়ীরা

শনিবার সরকারিভাবে সম্মেলন পিছিয়ে আপাতত ২৮ ডিসেম্বর করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও শিল্পমন্ত্রী আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন শিল্পপতি মহলে তা চাউর হতেই নানা আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:২৮
Share:

শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র। ফাইল চিত্র

প্রথমে ঠিক হয়েছিল, ২১ ডিসেম্বর বড়দিনের আগে শিলিগুড়িতে হবে শিল্প সম্মেলন। পোশাকি নাম- সপ্তম নর্থবেঙ্গল কনক্লেভ-২০১৯। উদ্যোক্তা রাজ্য সরকারে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন এবং বণিকসভা সিআইআই। উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলা, পড়শি সিকিম ছাড়াও প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ থেকেও প্রতিনিধিদের আসার কথা ঠিক হয়েছে। রাজ্যের অর্থমন্ত্রী তথা শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র ছাড়াও পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে ডাকার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়। কিন্তু শিল্পমন্ত্রী অমিতবাবু শেষে সময় দিতে না পারায় গত শনিবার সরকারিভাবে সম্মেলন পিছিয়ে আপাতত ২৮ ডিসেম্বর করা হয়েছে। কিন্তু সেখানেও শিল্পমন্ত্রী আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন শিল্পপতি মহলে তা চাউর হতেই নানা আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

উত্তরবঙ্গের শিল্পমহলের সঙ্গে জড়িত অনেকেই মনে করেছেন, শিল্প সম্মেলন হবে, কলকাতা থেকে শিল্পমন্ত্রী বা অর্থমন্ত্রীর মতো ব্যক্তিত্ব না আসলে সম্মলনে যোগ দেওয়ার কোনও মানেই হয় না। শুধুমাত্র বক্তব্য শোনা আর খাবার খাওয়া ছাড়া সম্মেলনের কিছুই হবে না। শিল্পমন্ত্রী থাকলে তিনি শিল্পপতি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে যেমন রাজ্য সরকারের বার্তা বা নতুন কোনও ঘোষণা জানাতে পারতেন।

তেমনই সবার কথা, বক্তব্য, অভিযোগ, সমস্যা বা প্রস্তাব শুনে কিছু সিদ্ধান্তের কথা জানাতে পারতেন। তিনি না আসলে তা হওয়ার নয়। বাকিরা মন্ত্রীরা আসলেও বিষয়টি পূরণ হবে না।

Advertisement

সরকারি সূত্রের খবর, নাগরিকপঞ্জি এবং নাগরিকত্ব আইন নিয়ে রাজ্য জুড়ে পরিস্থিতির জেরে অমিত মিত্রের আসা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

শিল্পমন্ত্রীই ছিলেন সম্মেলনের মুখ্য অতিথি। দুই দফায় সম্মেলন পিছিয়েও সব চূড়ান্ত হওয়ার পর এখন সম্মেলন পার করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে উদ্যোক্তাদের মধ্যে। ঠিক হয়েছে, ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠান করে, সম্মলনে উপস্থিতি প্রতিনিধিদের বক্তব্য লিখিত‌ ভাবে পরে শিল্পমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে বলে ঠিক হয়েছে। তেমনই, বাংলাদেশ, নেপালের প্রতিনিধিরা নেপালের সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ে যা বলবেন, সেগুলিও রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

সিআইআই-এর নর্থবেঙ্গল জোনের চেয়ারম্যান আনন্দ আগরওয়াল অবশ্য বলেছেন, ‘‘শিল্প সম্মেলন হচ্ছেই। শিল্পমন্ত্রীর একবার আসা বাতিল হয়েছে। নতুন দিনে তিনি আসবেন কি না এখনও চূড়ান্ত না। তবে উত্তরবঙ্গের বাকি মন্ত্রীদের আমরা আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’’

প্রতি বছর শীতকালে বণিকসভার তরফে উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রীয় শিল্প সম্মেলন, নর্থবেঙ্গল কনক্লেভের আয়োজন করা হয়। এ বার তা সাত বছরে পড়ল।

উত্তরবঙ্গের আটটি জেলাকে সামনে রেখে রাজ্যের বাকি জেলা, পড়শি রাজ্য এবং উত্তরবঙ্গের প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতিনিধিরা সম্মেলনে আসেন।

প্রতি জেলার আলাদা শিল্প সম্ভাবনা, বিনিয়োগের পথ ছাড়াও সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ে কনক্লেভে আলোচনা হয়। সেখানে রাজ্যের তরফে আসা মন্ত্রীরা সরকারের শিল্পনীতি, নতুন নতুন বিনিয়োগের ক্ষেত্র, সরকারি ভর্তুকি, জমি জট থেকে কোনও অভিযোগ থাকলে তা ছাড়ানোর চেষ্টা হয়। শিল্পপতিদের বক্তব্য, ‘‘শিল্পমন্ত্রী বা অর্থমন্ত্রী না আসলে এ সব এবারের সম্মেলনে শুধু আলোচনাই হবে। বাকিটা কী হবে পরিষ্কার নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement