উত্তম মোহান্ত। ফাইল চিত্র।
নয়া মোড় নিল এলআইসির ডেভেলপমেন্ট অফিসার উত্তম মোহান্তের মৃত্যু রহস্য।
সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে তার ওপর অত্যাচারের কথা বলা হলেও, বিষক্রিয়া না অন্য কোনও কারণে মৃত্যু তা নিয়ে কোনও চূড়ান্ত মতামত দেওয়া হয়নি৷ পাশাপাশি, রিপোর্টে ব্রেনে রক্ত জমাট বাধার কথা উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ ফলে বিষক্রিয়া, না অন্য কোনও কারণে উত্তমবাবুর মৃত্যু হল তা নিয়ে রহস্য দানা বাঁধছে৷
উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে উত্তমবাবুর দেহের ময়না তদন্ত করা হয়৷ সম্প্রতি সেই রিপোর্ট জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের হাতে এসেছে৷ পুলিশ সূত্রের খবর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে উত্তমবাবুর দুই হাতে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে৷ তাকে যে বেঁধে রাখা হতো বিষয়টি এর থেকে স্পষ্ট বলে মত পুলিশ কর্তাদের৷ পাশাপাশি ব্রেনে রক্ত জমাটের কথাও রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে৷ কিন্তু রিপোর্টে বিষের কথা উল্লেখ নেই৷ রিপোর্টে বলা রয়েছে, ভিসেরা রিপোর্টের পরই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত মতামত দেওয়া হবে৷
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, ‘‘এটাই স্বাভাবিক৷ বিষ রয়েছে না নেই সেটা ভিসেরা রিপোর্ট আসার পরই উল্লেখ করা হয়৷ এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে৷ তাছাড়া, উত্তমবাবুর ওপর যে অত্যাচার হয়েছে, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে সেটা স্পষ্ট৷’’ পড়ে যাওয়ার কারণেও তো মাথায় রক্ত জমাট বাঁধতে পারে৷ পুলিশ সুপার সাফ বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত তদন্তেও এটাই উঠে আসছে যে উত্তমবাবুকে খুনই করা হয়েছে৷’’ জলপাইগুড়ির এপিপি প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘উত্তমবাবুকে যে বেঁধে রাখা হতো তার প্রমাণ ময়নাতদন্তে পাওয়া গিয়েছে৷ ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে ভিসেরা পরীক্ষার পরই বিষ নিয়ে চিকিৎসকরা চূড়ান্ত মতামত দেবেন৷’’
এক চিকিৎসকের মতে, অনেক ধরণের বিষ থাকে যেগুলি থেকে গন্ধ বের হয়৷ ময়নাতদন্তের সময় সেই গন্ধেই বোঝা যায় বিষ থাকার বিষয়টি৷ অনেক ধরণের বিষের আবার গন্ধ হয় না৷ সেক্ষেত্রে বিষের ফলেই মৃত্যু কি না তা জানতে ভরসা একমাত্র ভিসেরা পরীক্ষা৷ তবে ওই চিকিৎসক এও জানান, ব্রেন স্ট্রোক হলেও ব্রেনে রক্ত জমাট বাঁধতে পারে৷
২৯ জুন জলপাইগুড়ির কদমতলা বাস স্ট্যান্ড লাগায়ো ভাড়া বাড়িতে মৃত্যু হয় উত্তমবাবুর৷ তাকে খুনের অভিযোগে ইতিমধ্যেই পুলিশ তাঁর স্ত্রী লিপিকা, মেয়ে শ্বেতা ও এক চিকিৎসককে গ্রেফতার করেছে৷ লিপিকার প্রেমিক অনির্বাণ অবশ্য পলাতক৷ এ দিন জলপাইগুড়ি আদালতে লিপিকা ও ওই চিকিৎসকের জামিনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল৷ কিন্তু আদালতে কেস ডায়েরি জমা না পরায় আজ বুধবার এই শুনানি হওয়ার কথা৷ পাশাপাশি পাঁচদিনের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর বুধবার শ্বেতাকেও ফের আদালতে তোলা হবে৷ পুলিশ সূত্রের খবর, তাকে ফের হেফাজতে নেওয়ার আর্জি জানানো হতে পারে৷