প্রতীকী ছবি।
করোনার নতুন স্ট্রেন মেলা যুবকের সঙ্গে একই উড়ানে লন্ডন থেকে কলকাতায় আসা এক মহিলা-সহ তিন যাত্রীর খোঁজ মিলল বক্সায়। যে ঘটনায় বৃহস্পতিবার হইচই শুরু হয় আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। যদিও ওই তিনজন-সহ তাঁদের সংস্পর্শে আসা অন্যদের প্রত্যেকের করোনা রিপোর্টই নেগেটিভ বলে বৃহস্পতিবার রাতে আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন। আর তার পরেই জেলা স্বাস্থ্য দফতরেও কার্যত স্বস্তি নেমে আসে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ২০ ডিসেম্বর লন্ডন থেকে কলকাতায় আসা এক যুবকের দেহে করোনার নতুন স্ট্রেনের সন্ধান মেলে। ওই যুবকের সঙ্গে একই দিনে একই উড়ানে হুগলির কয়েকজন বাসিন্দাও লন্ডন থেকে কলকাতায় এসেছিলেন। যাঁদের মধ্যে বক্সার জঙ্গল ঘুরতে আসা তিনজন রয়েছেন। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানতে পেরেছেন, রাজ্যে ফিরে তাঁরা সাতদিন হোম আইসোলেশনে ছিলেন। তার পরে ২৮ডিসেম্বর তিস্তা-তোর্সা এক্সপ্রেস ধরে আলিপুরদুয়ারের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। ২৯ ডিসেম্বর রাজাভাতখাওয়ার কাছে বন উন্নয়ন নিগমের বাংলোয় ওঠেন তাঁরা। এই তিনজনের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের আরও পাঁচজনও বক্সায় আসেন। স্বাস্থ্যকর্তারা জানিয়েছেন, আটজনের এই পর্যটক দলে থাকা তিনজনের লন্ডন ফেরতের বিষয়টি তাঁরা বুধবার জানতে পারেন। এর পরেই তাঁদের ওই বাংলোয় আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সেই সঙ্গে তাঁদের সংস্পর্শে আসা বাংলোর আরও সতেরো জনকে চিহ্নিত করা হয়। এ দিকে, লন্ডন থেকে ফিরে কেন ওই তিনজন ১৪দিন হোম কোয়রাইন্টিনে না থেকেই বেরিয়ে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশই।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারেই প্রত্যেকের নমুনার র্যাপিড অ্যান্টিজ়েন পরীক্ষা করা হয়। ফল নেগেটিভ আসে। আরও নিশ্চিত হতে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা প্রত্যেকের নমুনা আরটিপিসিআরে পরীক্ষার জন্য কোচবিহারে পাঠান। সেই রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত সকলকে বন বাংলো থেকে বার হতে নিষেধও করা হয়। বন উন্নয়ন নিগম সূত্রের খবর, বন বাংলোর বড় একটি গেট এ দিন তালাবন্ধ ছিল। আলিপুরদুয়ারের সিএমওএইচ গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “রাতে আরটিপিসিআরে হওয়া ২৫ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট এসেছে। সেই রিপোর্টে প্রত্যেককেই নেগেটিভ বলা হয়েছে।”
পর্যটনের এই মরসুমে প্রতিদিনই বহু পর্যটক ডুয়ার্সের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বাংলো ও রিসর্টে ঘুরতে আসছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও এ দিনের ঘটনা বিভিন্ন মহলে চিন্তা বাড়িয়েছে। সিএমওএইচ জানান, আলিপুরদুয়ারে ঘুরতে আসা পর্যটকদের নিয়মিত করোনা পরীক্ষার কথা ভাবা হচ্ছে। বন উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যান উদয়ন গুহ বলেন, “নিগমের বন বাংলোগুলোতে থাকার ক্ষেত্রে পর্যটকদের করোনা রিপোর্ট দেখানো বাধ্যতামূলক হচ্ছে।”