ঘরে-বাইরে রোজই নানা ঝড়-ঝঞ্ঝা সামাল দিতেই ব্যতিব্যস্ত তিনি। উপরন্তু, বয়স বেড়ে চলায় চোখের সমস্যা, রক্তে শর্করার বৃদ্ধিজনিত নানা হ্যাপা পোহাতেও কিছুটা সময় দিতে হয়। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত বিস্তর আলোচনা-সমালোচনাও সামলাতে হয়।
তারই ফাঁকে আরও একটি বই লিখে ফেলেছেন শিলিগুড়ি মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। সব ঠিক থাকলে ‘তিন প্রজন্মের নগরায়ন’ শীর্ষক বইটি আগামী ১৯ এপ্রিল কলকাতা প্রেস ক্লাবে প্রকাশিত হবে।
বইটি প্রকাশ করার কথা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের।
অশোকবাবুর কথায়, ‘‘এটা আমার সৌভাগ্য যে নতুন বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করতে রাজি হয়েছেন সৌমিত্রবাবু। আসা করি বইটা পাঠকদের মধ্যে সমাদৃতও হবে। লেখা নিয়ে যে কোন সমালোচনাও খোলা মনে গ্রহণের জন্য আমি প্রস্তুত।’’ অশোকবাবু নগরায়ন নিয়ে আগেও একাধিক বই লিখেছেন। সেই হিসেবে এটি তাঁর অষ্টম বই। এ বারের বইয়ে অশোকবাবু মূলত নগরায়নকে তিনটি প্রজন্মের নিরিখে বিশ্লেষণের চেষ্টা করেছেন।
প্রাক স্বাধীনতা আমলে উন্নয়ন দেশগুলি ও ভারতে নগরায়নের চেহারাটি কেমন ছিল সেটা এক ঝলকে সামনে রেখেছেন। স্বাধীনতার পরে নগরায়ন নিয়ে যে সব পদক্ষেপ হয়েছে, সেটাই দ্বিতীয় প্রজন্মের বলে তুলে ধরেছেন লেখক। ভারতে সংবিধান সংশোধন করে পুরসভা, পঞ্চায়েত ব্যবস্থাকে স্বীকৃতি দেওয়ার পরে নগরায়নের তৃতীয় প্রজন্মের সূচনা বলে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন শিলিগুড়ির মেয়র। সেই সঙ্গে দীর্ঘ দিন রাজ্যের পুরমন্ত্রী থাকার সময় ও বর্তমানে ভিন্ন শাসক দলের আমলে একটি পুরসভার মেয়র হওয়ার অভিজ্ঞতার সুবিধে-অসুবিধে, সুখ-দুঃখের নানা অনুভূতিও রয়েছে একাধিক লেখায়।
রাজনৈতিক নেতাদের একাংশ নিয়মিত বই লিখতে অভ্যস্ত। বিশেষত, রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ফি বছর বেশ কয়েকটি বই লিখে থাকেন। তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা যাই-ই হোক না কেন, জনপ্রতিনিধিরা নিজেদের অভিজ্ঞতার মিশেল দিয়ে লিখলে তা আগামী প্রজন্মের কাছে নানা ভাবে সহায়ক হয়ে ওঠে বলে কবি-লেখকদের অনেকেরই মত।
যেমন জলপাইগুড়ির একটি ক্ষুদ্র পত্রিকার সম্পাদক গৌতম গুহ রায় বলেন, ‘‘অশোকবাবুর একাধিক বই আমি পড়েছি। যে হেতু নগরোন্নয়ন বিষয়ে প্রায়োগিক অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর, তাই অনেক কিছু সহজ ভাষায় বলতে পারেন। যেটা সব ক্ষেত্রেই দরকার। নেতা-মন্ত্রীরা আরও বেশি করে কলম ধরলে তো ভালই হয়।’’