নাচগান থেকে ওয়াই-ফাই, থাকছে সবই

কোথাও ভুটানের সাইবাবার মন্দির, কোথাও মহারাষ্ট্রের মন্দির, কোথাও কোচবিহারের রাজবাড়ি আবার কোথাও স্থানীয় শিল্পী রচনা করছেন রাজস্থানের একটি মহলের শিল্পকলা। এই সমস্ত থিম নিয়ে পিছিয়ে নেই বেলাকোবা, ফাটাপুকুর এবং রাজগঞ্জের পুজো।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

বেলাকোবা (জলপাইগুড়ি) শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৪০
Share:

তৈরি হচ্ছে বাবুপাড়া সর্বজনীনের মণ্ডপ। — নিজস্ব চিত্র

কোথাও ভুটানের সাইবাবার মন্দির, কোথাও মহারাষ্ট্রের মন্দির, কোথাও কোচবিহারের রাজবাড়ি আবার কোথাও স্থানীয় শিল্পী রচনা করছেন রাজস্থানের একটি মহলের শিল্পকলা।

Advertisement

এই সমস্ত থিম নিয়ে পিছিয়ে নেই বেলাকোবা, ফাটাপুকুর এবং রাজগঞ্জের পুজো। তার সঙ্গে মনোরঞ্জনের জন্য কোনও কোনও পুজো কমিটি ব্যবস্থা করেছে নাচগানের আসর এবং বিনা মূল্যে ব্যবহার্য ওয়াই-ফাই জোন। বেলাকোবা, রাজগঞ্জ এবং ফাটাপুকুর মিলিয়ে এ বছর মোট ২১টি পুজো হচ্ছে। তার মধ্যে বেলাকোবায় ১১টি, রাজগঞ্জে ৭টি এবং ফাটাপুকুরে ৩টি পুজো হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে বেলাকোবায় ছ’বছর আগে বাবুপাড়া সর্বজনীন দুর্গোৎসবই বড় পুজো ছিল। তাদের টেক্কা দিয়ে এখন বড় বাজেটের পুজো হয়েছে বটতলা সর্বজনীন দুর্গোৎসবের পুজো। ৫২তম বর্ষে এ বারে বটতলার সর্বজনীনের নিবেদন সিকিমের নামচির সাইবাবার মন্দির। কাপড় এবং পাটের উপর ফাইবার সাজিয়ে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। ভেতরে ২৪টা দেবদেবীর মডেল থাকবে। শিলিগুড়ির কুমারটুলি থেকে আসবে সাবেক ঘরানার দুর্গামূর্তি।

Advertisement

বেলাকোবার পুরোনো পুজো বাবুপাড়া সর্বজনীন এ বার সত্তরতম বর্ষে পা দিল। একটি কাল্পনিক মন্দির তৈরি হচ্ছে। ভেতরে থাকবে হোগলাপাতা দিয়ে তৈরি বিভিন্ন মডেল। এরাও প্রতিমা আনছেন শিলিগুড়ির কুমারটুলি থেকে। বেলাকোবা বাজার এলাকার যুবশক্তি অ্যাসোশিয়েশনের পুজোর সদস্যরা জানিয়েছেন যে, তারা বাইরে থেকে কোন চাঁদা তোলেন না। ক্লাব সদস্যদের টাকায় পুজো হয়। রবীন্দ্রভারতীতে পড়া বেলাকোবার দুই শিল্পী অলক দত্ত এবং টিঙ্কু সরকার রাজস্থানের একটি মহলের আদলে মণ্ডপ বানাচ্ছেন। এ ছাড়াও শিলিগুড়ির কাওয়াখালির একটি বৃদ্ধাশ্রমের বাসিন্দাদের এবং জলপাইগুড়ির একটি হোমের বাসিন্দাদের তারা বেলাকোবার পুজো দেখাতে নিয়ে আসবেন। তাদের ভুরিভোজের ব্যবস্থা থাকবে। বেলাকোবার বাজার এলাকায় মুনলাইট ক্লাবের ১৯তম বর্ষের পুজোয় এবার থার্মোকলের পুতুল এবং মাটির ঘট দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে। ভিতরে থাকবে ১৪টা পুতুলের মডেল। এ ছাড়াও বেলাকোবার কলেজপাড়া সর্বজনীন, হাসপাতাল পাড়া সর্বজনীন এবং স্টেশন কলোনিতেও বড় পুজো হচ্ছে।

বেলাকোবা পার হয়ে ফাটাপুকুরে তিনটি পুজো হচ্ছে। তার মধ্যে বড় পুজো দুটি। একটি ঝাঞ্জুপাড়া বাসস্ট্যান্ড সর্বজনীন দুর্গোৎসব এবং অন্যটি নবীন সঙ্ঘের পুজো। ঝাঞ্ঝুপাড়া বাসস্ট্যান্ড সর্বজনীন দুর্গোৎসব জলপাইগুড়ি শিলিগুড়ির রাস্তার ধারে একটি মন্দির সংলগ্ন প্রাঙ্গণে হচ্ছে। এটাই ফাটাপুকুরের সব চেয়ে প্রাচীন পুজো। এবারে ৫১তম বর্ষে তারা রাজগীরের শ্বেতাম্বর জৈন মন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানাচ্ছেন। প্রতিমা আসছে জলপাইগুড়ি থেকে।

ঝাঞ্জুপাড়া প্রাচীন পুজো হলেও এ বারে বড় পুজো করছেন স্কুলপাড়ার নবীন সঙ্ঘের সদস্যরা। এবার তাদের ৪৮তম বর্ষে তারা কোচবিহারের রাজপ্রাসাদের আদলে মণ্ডপ তৈরি করছেন। তাদের বিশাল মাঠে এই মণ্ডপ মানানসই হচ্ছে। এরা পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত তাদের পুজামণ্ডপ প্রাঙ্গণে বিনামূল্যে ওয়াই-ফাই জোনের ব্যবস্থা করেছেন। চার দিন সন্ধ্যায় নাচগানের আসর বসবে।

রাজগঞ্জে ৭টি পুজো হলেও বাজার এলাকার শ্রী সঙ্ঘের পুজোটাই সবচেয়ে বড় পুজো। তাদের ৫১তম বর্ষের পুজোয় তারা তিনটি বিষয় উপস্থাপন করছেন। এক, মহারাষ্ট্রের একটি মন্দিরের আদলে তৈরি মন্ডপ। দুই, চারদিন সন্ধ্যায় নাচগানের ব্যবস্থা থাকবে। তিন, দশমীর দিন রাতে রাবণ বধ হবে। এদের প্রতিমা আসবে শিলিগুড়ির কুমারটুলি থেকে। পুজো কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন রাজগঞ্জে একটি বড় পুজো হওয়ায় পুজোর সন্ধ্যায় বাসিন্দারা পুজো প্রাঙ্গণে এসে ভিড় করেন। উদ্যোক্তারা জানান, অন্য বছরের মতো নাচগানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement