পানিট্যাঙ্কির ভারত নেপাল সীমান্ত। নিজস্ব চিত্র।
ভারত নেপাল সীমান্তের বাজারগুলিতে ওপারের দেশের ক্রেতাদের ভিড় কমেছে। নেপালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে শিলিগুড়ি এবং পানিট্যাঙ্কি, খড়িবাড়ি, বাগডোগরা, নকশালবাড়ির ব্যবসায়ীদের বড় অংশের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সূত্রের খবর, নেপাল সীমান্ত সংলগ্ন ভারতের এ পারে থাকা শিলিগুড়ির মহকুমার বাজারগুলি মিলিয়ে প্রতিদিন কমবেশি ৫ কোটি টাকার ব্যবসা কমেছে। নেপালের পরিস্থিতির জেরে শিলিগুড়ির ব্যবসা নিম্মমুখী হবে না তো? চিন্তায় ব্যবসায়ীরা।
নেপালের কাঁকরভিটা সীমান্তের সংলগ্ন ভারতের পানিট্যাঙ্কি বাজারে সে দেশের ক্রেতাই বেশি। সেখানে প্রত্যেকদিন বিক্রির ৮০ শতাংশই নেপালিদের কেনাকাটা। মেচি নদীর সেতু পার করে পানিট্যাঙ্কিতে এসে নেপালিরা কেনাকাটা করেন। স্বাভাবিক সময়ে দিনে কমবেশি ২ কোটি টাকার ব্যবসা হলেও বর্তমানে তা অর্ধেকের বেশি কমেছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। পানিট্যাঙ্কি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির তরফে গোকুল সরকার বলেন, ‘‘নেপালের ক্রেতাদের উপর এপারে ব্যবসা চলে। সে দেশের মানুষ ঘর থেকে বার হতে ভয় পাচ্ছেন। কয়েকজন এলেও সেভাবে কেনাবেচা হচ্ছে না।’’
শুধু পানিট্যাঙ্কি নয়, নেপাল সীমান্তের কাছে নকশালবাড়ি, খড়িবাড়ি, বাগডোগরা এবং শিলিগুড়ি শহরের মত বাজার রয়েছে। বাজারগুলি থেকে পোশাক থেকে ঘর সাজানোর সামগ্রী, নির্মাণ সামগ্রী এমনকি চাল, ডাল, তেল থেকে বিভিন্ন সামগ্রী কেনেন নেপালিরা। নকশালবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি পৃথ্বীশ রায়ের বক্তব্য, ‘‘নেপালের ক্রেতার সংখ্যা কমছেই। আনাজ থেকে পোশাক, বাড়ির নানা ধরণের সরঞ্জাম বেশি পরিমানে নিয়ে যেতেন অনেকই। পরিস্থিতি উন্নতি না হলে কি হবে, কে জানে!’’
শুল্ক দফতর সূত্রে খবর, নেপালের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ভারত নেপাল সীমান্তে আমদানি রফতানিতেও প্রভাব পড়েছে। পাট, পোশাক, চাল, ডাল থেকে আরও কিছু সামগ্রী বর্তমানে দিনে ৪০-৪৫ ট্রাক নেপালে যাচ্ছে। অন্যান্য সময়ের যা অনেক বেশি যায়। আদা, এলাচ থেকে কিছু সামগ্রীর আমদানিও কমেছে। শুল্ক দফতরের পানিট্যাঙ্কির এক অফিসার বলেন, ‘‘অনেক সামগ্রীর আমদানি, রফতানি কমেছে। নেপালের পরিস্থিতি নজরে রাখা হচ্ছে।’’
মেচী নদীর উপর এশিয়ান হাইওয়ে-২ এর নতুন সেতু চালু হয়েছে। তার সামনে ভারতীয় ট্রাকের লাইন অবশ্য রয়েছে। তবে তা কিছুটা কমই। এক ট্রাক চালকের বক্তব্য, ‘‘দুদিন ধরে সীমান্তে অপেক্ষায় আছি। ধীরে ধীরে ওপারে যাচ্ছে। বেশিদিন থাকলে কাঁচা মালপত্র নষ্টের আশঙ্কা রয়েছে।’’