গাজলের আলমপুরে জাতীয় সড়ক অবরোধ। নিজস্ব চিত্র
কথা ছিল, সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা পথ অবরোধের মাধ্যমে ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি করার। কিন্তু কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই অবরোধ উঠে গেল। বুধবার আদিবাসীদের সংগঠন ‘ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহল’-এর তরফে রাজ্য জুড়ে ১২ ঘণ্টা ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছিল। প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর পর্যন্ত সাঁওতালি (অলচিকি) ভাষায় পঠনপাঠন চালু ও সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষার পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবিতে ওই আন্দোলনে নামেন মহলের সদস্যেরা। কিন্তু মালদহ ও দুই দিনাজপুরের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ওই অবরোধ উঠে যায়।
সংগঠনের উত্তর দিনাজপুর জেলা পারগানা টুইলা মুর্মু বলেন, “সরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন ভাষায় পঠনপাঠনের ব্যবস্থা চালু রয়েছে। অথচ, প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর স্তর পর্যন্ত আদিবাসীদের জন্য সাঁওতালি ভাষায় পঠনপাঠন চালু করা হচ্ছে না। এরই প্রতিবাদে, আদিবাসীরা পথ অবরোধের মাধ্যমে ‘চাক্কাজ্যাম’ কর্মসূচি পালন করেন।” তাঁর দাবি, দুই দিনাজপুর ও মালদহের বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা আদিবাসীদের দাবি রাজ্য সরকারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তাই পুলিশ ও প্রশাসনের অনুরোধে ও যাত্রীদের দুর্ভোগ রুখতে নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই পথ অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
এ দিন মালদহের গাজলের আলমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি পালন করেন আদিবাসী সংগঠনটির সদস্যেরা। দুপুর ১২টা থেকে প্রায় তিন ঘন্টা তির-ধনুক নিয়ে আন্দোলনকারীদের অনেকেই অবরোধে শামিল হন। হবিবপুর থানার কেন্দপুকুরে মালদহ-নালাগোলা রাজ্য সড়কেও বেশ কয়েক ঘণ্টা অবরোধ চলে। ফলে, ওই দুই এলাকায় অবরোধের জেরে, যানজটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে ওঠে বলে অভিযোগ। সকাল ১০টা থেকে প্রায় তিন ঘণ্টা উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের শিলিগুড়ি মোড় এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে ওই কর্মসূচি পালন করেন আদিবাসীরা। প্রায় একই সময় ধরে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের চৌমাথা এলাকার ৫১২ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান পারগানা মহলের সদস্যেরা। ওই দুই এলাকাতেও আদিবাসীদের অনেকেই তির-ধনুক নিয়ে ওই আন্দোলনে শামিল হন।
সংগঠনের রাজ্য সহকারি সভাপতি বাপি সরেন বলেন, “পৃথক সাঁওতালি শিক্ষা-বোর্ড গঠন করে পঠনপাঠন চালু, রাজ্যের সমস্ত স্কুলে সাঁওতালি মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ-সহ সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষার প্রসারের স্বার্থে সংগঠনের আন্দোলন চলবে।”