কয়েক দশক আগে শিলিগুড়ি শহরের উন্নয়নের আধুনিক পরিকাঠামোর ভিত কংগ্রেসের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী করে গিয়েছিলেন বলে নির্বাচনী ইস্তাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ গত শিলিগুড়ি পুরবোর্ডে কংগ্রেসের মেয়র গঙ্গোত্রী দত্তের নাম এক বারের জন্যও দলের ইস্তাহারে কোথাও রাখা হল না। বা তাঁর নাম করে কাজের প্রসঙ্গ তুলে ধরা হল না। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলে কংগ্রেস নেতৃত্ব দাবি করেছেন, প্রার্থী করা না হলেও গঙ্গোত্রীদেবীকে সামনে রেখেই এই নির্বাচনে লড়াই করছেন তাঁরা। যদিও কী করে গঙ্গোত্রীদেবীকে সামনে রেখে তাঁরা লড়ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা।
কংগ্রেসের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের প্রথম মহিলা মেয়র এবং তাঁর সময় শিলিগুড়ি প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ মুক্ত শহর হিসাবে ঘোষণা হলেও তাঁর নাম এবং ওই কাজের বিষয়টি কেন কংগ্রেসের ইস্তাহারে রাখা হল না? কংগ্রেস সূত্রের খবর, কখনও বামফ্রন্টের সহায়তা নিয়ে, কখনও তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে, কখনও সংখ্যালঘু হয়েও গঙ্গোত্রী দত্তকে খুঁড়িয়ে বোর্ড চালাতে হয়েছে। চেষ্টা করলেও উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কাজ তিনি করে উঠতে পারেননি। গঙ্গোত্রীদেবীকে উল্লেখ করে তাই উন্নয়নের দাবি করলে জনমানসে কংগ্রেসের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে বিরোধীরা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারে। তাই তাঁকে সামনে রেখে নির্বাচন করা হচ্ছে বলে মুখে জানানো হলেও আসলে তাঁকে আড়ালে রাখতে চাইছে বলে কংগ্রেসের একাংশ মনে করছেন।
প্রাক্তন মেয়র গঙ্গোত্রীদেবী এ দিন প্রকাশিত ইস্তাহারে তাঁর নাম না থাকার ব্যাপারে কোনও ভুল দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘আমি কী করেছি মানুষ জানেন। ইস্তাহারে আমার সময় বিভিন্ন কাজের কথাও বলা হয়েছে। নাম না থাকায় কোনও সমস্যা বা ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করি না।’’ জেলা কংগ্রেসের সভাপতি শঙ্কর মালাকারও দাবি করেন, গঙ্গোত্রীদেবীকে সামনে রেখেই ওই নির্বাচনে তাঁরা লড়ছেন। তিনি বলেন, ‘‘নাম থাকা বা না থাকা কোনও বিষয় নয়। গঙ্গোত্রীদেবীর আমলে যে সমস্ত কাজ হয়েছে তা আমরা ইস্তাহারে উল্লেখ করেছি।’’ তবে তাঁর আমলে কিছু করতে গেলেই নানা সমস্যার মুখে পড়ে উন্নয়ন কাজ যে করা সম্ভব হয়নি তা স্বীকার করেছেন প্রাক্তন মেয়র। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এক বার পাশ না করলেও পরের বার যে পারব না এমন ভাবার কারণ নেই।’’ গঙ্গোত্রীদেবী প্রার্থী না হওয়া নিয়ে অবশ্য তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির কারণ দেখিয়েছেন।
রাজ্যে এবং পুরসভাগুলিতে একই সরকার ক্ষমতায় থাকলে উন্নয়নের সহায়ক হয় বলে মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্য টেনে শঙ্করবাবু বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের মনোভাব মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যেই স্পষ্ট। গঙ্গোত্রীদেবী মেয়র থাকাকালীন নানা ভাবে ওই পুরবোর্ডকে আর্থিক প্রতিবন্ধকতার মুখে ফেলেছে রাজ্য সরকার।’’