নাহিদ ফিরদৌস। নিজস্ব চিত্র।
গ্রামের মধ্যবিত্ত পরিবারের বধূ নাহিদ ফিরদৌস। তিনি বিচারক হওয়ার পথে। সংসার-হেঁসেল সামলে উত্তর দিনাজপুর জেলার গোয়ালপোখর ২ ব্লকের গন্ডালের লোচা গ্রামেরনাহিদ পশ্চিমবঙ্গ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষায় পাস করেছেন। তাঁর এই সাফল্য খুশি বাবা-মা ,স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
বাবা মহম্মদ আবু নাসার পেশায় কৃষক। মা তাব্বাসুম মেহেজবিন গৃহবধূ। স্বামী মহম্মদ বুয়া এক বেসরকারি সংস্থার কর্মী। নাহিদের বাবার বাড়ি ডালখোলার কাছে বিহার সীমানায় প্রত্যন্ত গ্রাম চোচা গ্রামে। ২০১৫ সালে নাহিদের বিয়ে হয় চাকুলিয়ায়। মফস্সল এলাকায় থেকে সংসার-হেঁসেল সামলে কোচিং ছাড়াই বিচারকের পরীক্ষায় তাঁর সাফল্য সকলের নজর কেড়েছে। নাহিদ ২০১০ সালে গ্রামের মেয়েদের মধ্যে প্রথম মাধ্যমিক পাশ করে। এর পরে বিহারের কিসানগঞ্জে একটি বেসরকারি স্কুলে পড়ে নাহিদ। পরবর্তীতে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন নিয়ে পাশ করে জুডিশিয়াল পরীক্ষায় বসেন নাহিদ। নাহিদ বলেন, ‘‘পড়াশোনা চলাকালীনই বিয়ে হয়। বিয়ের পরে স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজন পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সমর্থন করেন। এর আগেও দুবার পরীক্ষায় বসেছিলাম। ২০২২ সালে ৮ মাসের ছেলেকে নিয়ে প্রস্তুতি নিতে হয়। এ বার সাফল্য এসেছে। সম্প্রতি ফল প্রকাশের পরে ট্রেনিংয়ে জন্য নির্দেশ এসেছে। এই সাফল্যে আমি খুশি।"
নাহিদরা দুই ভাই, দুই বোন। নাহিদ বড়। নাহিদের ভাই-বোনেরা পড়াশোনা করছে। নাহিদের বাবা বললেন, ‘‘মেয়ের ইচ্ছায় আইন নিয়ে পড়াশোনার জন্য আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি করি। আর দশটা গতানুগতিক পেশাকে না বেছে ওর স্বপ্ন ছিল বিচারক হওয়ার।’’ নাহিদের সাফল্যে খুশি স্বামী মহম্মদ বুয়া বলেন, ‘‘বিয়ের পরে ওকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে সাহায্য করি। নাহিদের গ্রাম পিছিয়ে পড়া। সেই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে নাহিদের এই সাফল্যে অন্যদের প্রেরণা জোগাবে। নাহিদের সাফল্যে গর্বিত।"