শোকাহত সাবিত্রীর পরিজনেরা। নিজস্ব চিত্র
প্রতিবেশীর বাড়িতে গিয়ে এক শিক্ষিকার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম সাবিত্রী বর্মণ (৩৬)। হেমতাবাদ থানার বিষ্ণুপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের খাল বিষ্ণুপুর এলাকার ঘটনা। মৃতা খাল বিষ্ণুপুর শিশুশিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষিকা ছিলেন।
পারিবারিক সূত্রের খবর, তিনি মঙ্গলবার বিকেলে প্রতিবেশী গিরিশচন্দ্র রায় নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সন্ধেয় সাবিত্রী আচমকা অসুস্থ হয়ে তাঁর বাড়ির বারান্দায় পড়ে গিয়েছেন বলে গিরিশচন্দ্র খবর দেন। এরপর সাবিত্রীর বাড়ির লোকজন অচেতন অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা সাবিত্রীকে মৃত বলে জানান। কিন্তু সাবিত্রী কী পরিস্থিতিতে অসুস্থ হয়ে পড়ে গেলেন, কীভাবে তাঁর মৃত্যু হল, তা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে।
বুধবার হাসপাতালে ওই শিক্ষিকার মৃতদেহটি ময়নাতদন্ত হয়েছে। মৃতার মাথায় ও মুখে আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। তবে তিনি পড়ে গিয়ে সেই আঘাত পেয়েছিলেন কিনা, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, সাবিত্রী দীর্ঘদিন ধরে গিরিশের কাছে টাকা পেতেন। সেই নিয়ে কোনও গোলমালের জেরে তাঁর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপার সুমিত কুমারের বক্তব্য, মৃতার পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ দায়ের হলে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, কয়েকমাস আগে সাবিত্রী গরু বিক্রি করে গিরিশকে টাকা ধার দিয়েছিলেন। মঙ্গলবার সাবিত্রীর স্বামী রমেন্দ্রনাথ বর্মণ সাবিত্রীকে সেই টাকা আনার কথা বলেন। সেইমতো, সাবিত্রী পেশায় তেলেভাজা ব্যবসায়ী গিরিশের বাড়িতে গিয়ে তাঁর কাছে টাকা ফেরত চাইতে যান। এর কিছুক্ষণ পর গিরিশ ও তাঁর পরিবারের লোকেরা খবর দেন, সাবিত্রী আচমকা অসুস্থ হয়ে তাঁদের বাড়ির বারান্দায় পড়ে গিয়েছেন।
মৃতার ভাই মানিক বর্মণ বলেন, ‘‘দিদি গিরিশকে ২৩ হাজার টাকা ধার দিয়েছিলেন বলে শুনেছি। সেই টাকা ফেরত আনতে গিয়েই দিদি গিরিশের বাড়ির বারান্দায় পড়ে গিয়ে মারা যান। দিদি অসুস্থ হয়ে মারা গিয়েছে, নাকি তাঁরে মারধর করে খুন করা হয়েছে, তা আমরা বুঝতে পারছি না। প্রয়োজনে আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব।’’