প্রতীকী ছবি।
মাস দেড়েক আগে নাবালিকাকে ধর্ষণের চেষ্টা। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলে তা প্রত্যাহার করতে বলে গোটা পরিবারকেই খুন করার হুমকি। সহ্য করতে না পেরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন নির্যাতিতা। জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির ধর্মপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ওই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনা। ধর্মপুর এলাকার বাসিন্দা ওই নাবালিকার ঘরে ঢুকে তাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় যুবক অজয় রায়ের বিরুদ্ধে। নাবালিকার পরিবারের দাবি, মেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করায় তখন পালিয়ে গিয়েছিলেন ওই যুবক। এর পর ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তদন্ত নেমেই পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত পলাতক। পরে পরিবার জানতে পারে, আদালতে আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিন পান অজয়। পরিবারের দাবি, অজয় স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিজয় রায়ের ভাই।
নাবালিকার পরিবারের অভিযোগ, বুধবার দুপুরে মুখ ঢাকা অবস্থায় দুই যুবক তাঁদের বাড়িতে এসে হাজির হন। ওই সময়েও বাড়িতে একা ছিল নাবালিকা। তাকে ওই দুই যুবক হুমকি দিয়ে বলেন, অভিযোগ প্রত্যাহার করা না-হলে বাড়ির সকলকে খুন করা হবে। এর পরেই বৃহস্পতিবার দুপুরে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে ওই নাবালিকা। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন সে। এই ঘটনায় পর আবার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে বিজয় রায় নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘নাবালিকাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। এই অভিযোগ গত মার্চ মাসে দায়ের করে পরিবার। এর পর পুলিশ অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছিল। তার মধ্যে অভিযুক্ত আদালত থেকে জামিন নিয়ে আসে। এর পর বুধবার নাবালিকাকে হুমকি দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার নাবালিকা আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তার পরিবার ফের অভিযোগ দায়ের করেছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বিজয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। অজয়ের খোঁজ করছি আমরা’’
এই ঘটনায় তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তুলে বিজেপি-র জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, ‘‘গোটা রাজ্যে যা হচ্ছে, এখানেও ঠিক তাই হল। এক মাসের বেশি সময় ধরে পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে পারল না। উল্টে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে গেল। যার জেরে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটল। এই সরকারের কাছে কিছু চেয়েই কোনও লাভ নেই। এখানে প্রশাসন বলে কিছু নেই। অবিলম্বে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে সর্বোচ্চ শান্তি দিতে হবে।’’
তবে, তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক রাজেশ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘আমার কাছে কোনও খবর নেই। খোঁজ নিয়ে জানাব।’’