প্রতীকী ছবি।
এ যেন উলট পুরাণ।
যেখানে করোনা আবহে বন্ধ হয়েছে সিবিএসই ও আইসিএসসি বোর্ডের পরীক্ষা। বিশেষজ্ঞ কমিটি গড়ে, তাঁদের এবং অভিভাবক-পড়ুয়াদের মতামত নিয়ে এ রাজ্যের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাও বন্ধ হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষাও বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থতিতেই স্কুল, কলেজ খোলার দাবিতে মালদহে পথে নামল একদল পড়ুয়া। আন্দোলনকারী সেই পড়ুয়াদের মধ্যে রয়েছে শিশু শিক্ষাকেন্দ্র ও স্কুল পড়ুয়া থেকে শুরু করে কলেজ পড়ুয়ারাও। রবিবার দুপুরে পুরাতন মালদহের বাচামারি এলাকায় রাস্তার পাশে হাতে পোস্টার নিয়ে স্কুল-কলেজ খোলার দাবিতে সরব হল। তাঁদের বক্তব্য, ‘আমরা শুরু করলাম, এই আওয়াজ সর্বত্র ওঠা উচিত।’
কিন্তু কেন তাঁদের পথে নামা?
আন্দোলনকারীদের অন্যতম গৌড় কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী শিল্পী পাল বলেন, ‘‘প্রায় দু’বছর ধরে আমরা ঘরবন্দি। অনলাইনে ক্লাস করে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। মোবাইলের প্রতি আমাদের আসক্ত বরং বেড়ে যাচ্ছে। মানসিক অবসাদ গ্রাস করছে। শিক্ষা আমাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু আমরা এই শিক্ষা থেকেই পিছিয়ে পড়ছি, হারিয়ে যাচ্ছি।’’ তাঁর প্রশ্ন, বিধি মেনে আট দফায় যদি নির্বাচন কমিশন থেকে সরকার ভোট করাতে পারে তবে বিধি মেনে স্কুল খোলার ক্ষেত্রে অসুবিধে কোথায়?
সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের পড়ুয়া সোনালি পাল বা কলেজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ছাত্রছাত্রী রূপালী পাল, রিন্টু মণ্ডলরা বলেন, ‘‘যখন ভোট হয়েছিল তখন তো করোনার প্রভাব মারাত্মক ছিল। সে সময় রাজনৈতিক দলগুলি হাজার হাজার মানুষকে নিয়ে জনসভা করেছে, মিছিল-মিটিং করেছে। সে সময় তাদের করোনার কথা মাথায় ছিল না?’’ যত কিছু বাধা বিপত্তি এই শিক্ষাকে নিয়েই, প্রশ্ন তাঁদের।
মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পিন্টু মণ্ডল বলে, ‘‘দু’বছর ধরে স্কুলে ক্লাস হয়নি। অনলাইন ক্লাসও হয়নি। তবে লক্ষ্য ছিল মাধ্যমিকে ভাল ফল করব। আর তাই দিনরাত পড়াশোনা করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরীক্ষাই হল না। মেধার বিচারও হল না। মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রাপ্ত নম্বর কখনই যথার্থ হতে পারে না।’’ তাঁদের দাবি, শিক্ষাব্যবস্থার দিকেই সরকারের আগে নজর দেওয়া উচিত। পড়ুয়াদের এই দাবি নিয়ে অবশ্য মালদহ জেলা প্রশাসনের কোনও আধিকারিক মন্তব্য করতে চাননি।