দেহ আগলে। িনজস্ব চিত্র
রাস্তার পাশে রাখা বালির ঢিবির ওপর পড়ে রয়েছে সন্তানের নিথর দেহ। নাওয়া-খাওয়া ভুলে প্রায় দিনভর সেই দেহ পাহারা দিল মা। মাঝেমধ্যে পাশ দিয়ে যাওয়া যানবাহন দেখে এগিয়েও গিয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে আরও একটি কুকুরছানার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন দৃশ্যই দেখলেন কোচবিহার শহরের গুঞ্জবাড়ি লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা।
গত শুক্রবার রাতে গুঞ্জবাড়ি লাগোয়া ১ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচটি কুকুরছানার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় আলোড়ন পড়েছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে সেই শুক্রবারেই গুঞ্জবাড়ি লাগোয়া ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ওই কুকুরছানাটির দেহ মেলে। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তারা বিষয়টি কোচবিহার কোতোয়ালি থানাতেও লিখিতভাবে জানান।
বাসিন্দাদের একটি অংশের অবশ্য দাবি, দুর্ঘটনায় ওই কুকুরছানার মৃত্যু হয়েছে। কামেশ্বরী রোড এলাকার বাসিন্দা সুকুমার কর্মকার বলেন, “বৃহস্পতিবার ছানাটিকে বালির ওপরে শুয়ে থাকতে দেখি। ডাকাডাকি করলেও আসেনি। বাইরে আঘাতের চিহ্ন দেখেনি। তবে গাড়ির ধাক্কায় মারা পড়তে পারে।’’ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য নবেন্দু ভদ্র বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে তো মা কুকুর মৃত্যুর পরেও ছানাটির দেহ আগলে ছিল। তাই খাবারের অভাবে এই ছানার মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। ময়নাতদন্ত হলে ভাল হত।’’ ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তা রাজা বৈদ বলেন, ‘‘কারণ যাই হোক, পরপর মৃত্যু উদ্বেগের। পূর্ণাজ্ঞ তদন্ত হলে ভাল।’’ প্রাণী সম্পদ দফতরের কোচবিহারের উপঅধিকর্তা শেখরেশ ঘোষ বলেন, “বিকেল পর্যন্ত আমাদের কাছে এই সংক্রান্ত কোনও খবর নেই।’’ ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুনেছি। দেখছি।’’
সন্ধের দিকে পুরসভার কর্মীরা এসে কুকুরছানাটির দেহ নিয়ে যান। মা তখনও দেহ আগলে বসে। সে পুরকর্মীদের পিছন পিছন অনেকদূর যায়। তারপর ফিরে আসে।