সভামঞ্চে মলয় ঘটক। রবিবার কালচিনিতে। নিজস্ব চিত্র
চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ না হওয়ার জন্য বিরোধী শ্রমিক সংগঠনগুলোকে দায়ী করলেন রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক। পাশাপাশি রবিবার তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের সমাবেশ থেকে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বার্লার বাড়ি ও শপিংমল নিয়ে তাঁকে বিঁধলেন তিনি। শ্রমমন্ত্রীর অভিযোগ, চা শ্রমিকদের অন্তর্বর্তী মজুরি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে মালিকপক্ষের সঙ্গে চুক্তিতেও বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে সিটু।
চা শিল্পে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনকে ইতিমধ্যেই এক ছাতার তলায় নিয়ে এসেছে তৃণমূল। নতুন ওই সংগঠনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন’। কালচিনির থানা ময়দানে এ দিন তৃণমূলের এই চা শ্রমিক সংগঠনের প্রথম সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে মন্ত্রী মলয় ঘটক ছাড়াও আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ সংগঠনের অন্যান্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ওই সমাবেশ থেকেই মন্ত্রী বলেন, “আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা নিজেকে চা শ্রমিক বলে পরিচয় দেন। তিনি নিজেকে যে বাগানের শ্রমিক বলেন, সেই বাগানের বাকি শ্রমিকদের সঙ্গে তাঁর ঘর মিলিয়ে দেখুন। দেখবেন, বাকি সবার ঘর টিনের চালের। আর জন বার্লা নিজে মহল গড়ে তুলেছেন। সরকারি জমি দখল করে বিরাট শপিং মল বানাচ্ছেন।”
এর পরই ন্যূনতম মজুরি নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করেন শ্রমমন্ত্রী। তাঁর বক্তব্য, রাজ্য সরকার ন্যুনতম মজুরি নিয়ে কমিটি গঠন করে দিয়েছে। বিরোধী শ্রমিক সংগঠনের নেতারা ওই কমিটিতে রয়েছেন। কিন্তু আট বছরেও ন্যূনতম মজুরি নিয়ে তাঁরা কোনও রফা করতে পারল না। মাঝে কেন্দ্রীয় সরকার ন্যূনতম মজুরি করবে বলল। কিন্তু এখনও করতে পারেনি। মন্ত্রীর কথায়, ‘‘সে জন্যই যত দিন পর্যন্ত ন্যূনতম মজুরি না হচ্ছে, তত দিন অন্তর্বর্তী মজুরি বাড়িয়ে আমরা শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছি। সে জন্য আমরা আবার চুক্তি করতে চাইছি। কিন্তু সিটু তাতে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।”
সিটুর আলিপুরদুয়ার জেলা সম্পাদক বিকাশ মাহালি পাল্টা বলেন, “শ্রমমন্ত্রী নিজের সরকারের দোষ ঢাকবার জন্য এ ধরনের ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন। ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দায়িত্ব সরকারের। তা ছাড়া চুক্তির পর অন্তবর্তী মজুরি বৃদ্ধির হওয়ার কথা থাকলেও, সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী চুক্তির আগেই তা ঘোষণা করে দিয়েছেন।” বার্লাও অভিযোগ করেন, কমিটির সঙ্গে কুড়ি বার বৈঠক করেও ন্যূনতম মজুরি ঘোষণায় ব্যর্থ রাজ্য সরকার। তাঁর বাড়ি ও শপিং মল নিয়ে শ্রমমন্ত্রীর তোলা অভিযোগ নিয়ে বার্লার জবাব, “চোরেদের এ ধরনের কথার কোনও উত্তর দেব না।”