পাশাপাশি: সৌরভের (বাঁ দিকে) মোহন শর্মা। ফাইল চিত্র
আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক। বাড়িও আলিপুরদুয়ারে। তাঁর নেতৃত্বেই লোকসভার পরে বিধানসভা ভোটেও জলপাইপাইগুড়ির সঙ্গে আলিপুরদুয়ারেও সফল তৃণমূল। সেই আলিপুরদুয়ারে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হল সৌরভ চক্রবর্তীকে। এলেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি মোহন শর্মা। সৌরভ অবশ্য জলপাইগুড়ির সভাপতি রইলেন।
দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে বুধবার তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে ছিলেন সৌরভ ও মোহন দু’জনেই। তাই এই পরিবর্তনকে সৌরভবাবুর ‘ডানা ছাঁটা’ হয়েছে বলে দাবি করছেন দলে তাঁর বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। দুই জেলার সভাপতি থাকার সময়ে নানা সিদ্ধান্ত নিয়ে সৌরভবাবুর বিরুদ্ধে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিরোধী গোষ্ঠীর নেতারা। সে কারণেই দলে তাঁর থেকে নবাগত মোহনবাবুকে সামনে আনা হল বলে দাবি। যদিও দলের অন্দরে পাল্টা দাবি, মোহনবাবু দলে ঢুকেছিলেন সৌরভবাবুর হাত ধরেই। কাজেই পদে যিনি থাকুন না কেন জেলার সাংগঠনিক রাশ সৌরভবাবুর হাতেই থাকতে চলেছে।
গত লোকসভা ভোটের আগে থেকেই আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি দুই সাংগঠনিক জেলার দায়িত্বে ছিলেন সৌরভবাবু। লোকসভা ভোটে দলের সাফল্যের পরে সৌরভবাবুকেই পাকাপাকি ভাবে দল সভাপতির দায়িত্ব দেয়। বিধানসভা ভোটেও দুই জেলার ১২টি আসনের মধ্যে ১১টিই তৃণমূলের ঝুলিতে আসে। সেই ভোটের পরে রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের সাংগঠনিক রদবদল হলেও জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ারে কোনও পরিবর্তন হয়নি।
তবে হঠাৎ কেন পরিবর্তন? এ বার আলিপুরদুয়ার থেকে বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছে সৌরভবাবু। শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানও তিনি। প্রশাসনিক দায়িত্ব বাড়ায় সৌরভবাবু সংগঠনের কাজে তেমন সময় দিতে পারছিলেন না বলে বিরোধী গোষ্ঠীর নেতাদের দাবি। অন্য দিকে সম্প্রতি চা বলয়ের নেতা তথা আলিপুরদুয়ারের সহ সভাধিপতি অতুল সুব্বা এবং পবন লাকড়া তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। অতুলবাবুকে সামনে রেখে চা বলয়ে জোর বাড়াতে সক্রিয় হয়েছে বিজেপি। তার পাল্টা চা বলয়ের মুখ মোহন শর্মাকে এগিয়ে গিতেই পদক্ষেপ বলে অনেকে মনে করছেন। মোহনবাবু তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য নেতা। এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে কোর কমিটির বৈঠকে মোহনবাবু-সৌরভবাবু দুজনেই উপস্থিত ছিলেন। ডানা ছাঁটার অভিযোগ মানতে চাননি সৌরভবাবু।